লক্ষ্য লোকসভা ভোট এবং তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোট। অথচ হাতে অস্ত্র তেমন নেই। গন্ডা গন্ডা তাস বিরোধীদের হাতে। এই অবস্থায় উন্নয়নের মোড়কে জাত-ধর্মের ঘুঁটি কী ভাবে সাজাতে হবে, বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তা বোঝালেন নরেন্দ্র মোদী।
রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধীরা একজোট হলে লড়াই যে কঠিন, তা বুঝছে বিজেপি। তাই পাল্টা কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। পরের ভোটে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি আরও বেশি আসন নিয়ে ফিরবে— এটিই বেশি করে প্রচার করতে বলা হচ্ছে দলকে। এই কৌশল নিয়েই আজ ম্যারাথন বৈঠক হল দিল্লিতে, বিজেপির নতুন দফতরে।
বিজেপি সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রীদের জানানো হয়, দলিত মন জয়ে সংসদে পাশ হওয়া দলিত আইন নিয়ে প্রচার করতে হবে। ওবিসি মন জয়ে ওবিসি বিল। কিন্তু দলিত-ওবিসি করতে গিয়ে চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক উচ্চবর্ণের যাতে গোঁসা না হয়, সেটিও দেখতে হবে। পাশাপাশি নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও হাওয়া তুলতে হবে। যাতে গোটা দেশে মেরুকরণের রাজনীতি করতে পারবে বিজেপি। তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে ফায়দা তোলা যাবে এই অস্ত্রে। সেই সূত্রেই বৈঠকের ফাঁকে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ জানান, নাগরিক পঞ্জি নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট। অনুপ্রবেশকারীদের বরদাস্ত করা হবে না। অন্য দেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের আশ্রয় দেওয়া হবে।
বিজেপি শুধু জাত-ধর্মের রাজনীতি করছে, এটি যাতে ফুটে না ওঠে, তার জন্য উন্নয়নের কথাও থাকবে। আর তাতে ‘মোদী-কেয়ার’কেই সবথেকে বড় হাতিয়ার করতে চায় বিজেপি। মোদীর ‘গরিব-দরদী’ ভাবমূর্তিতে শান দিতে এটি তুরুপের তাস হতে পারে বলে আশা বিজেপির। সঙ্গে থাকবে কৃষকদের সহায়ক মূল্যবৃদ্ধি, গরিবদের রান্নার গ্যাস, আবাসন, বিদ্যুতের প্রচার। সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা দিয়ে ডেটাবেসও তৈরি করতে বলা হয়েছে আজকের বৈঠকে।
রাহুল গাঁধী বারেবারেই বলছেন, শুধু উত্তরপ্রদেশ-বিহারে জোট হলে ১২০টি আসনে প্রায় সাফ হয়ে যাবে বিজেপি। সেটির মোকাবিলায় বিজেপি বলবে, মোদীর নেতৃত্বে দেশ কেমন এগোচ্ছে। রমন সিংহ বলেন, ‘‘বিরোধীদের নেতা কে, সেটিই ঠিক করে উঠতে পারছে না! মোদীর নেতৃত্বেই বিজেপি গত লোকসভার থেকেও বেশি আসনে জিতবে। তিন রাজ্যের বিধানসভাতেও জয় হবে।’’