ছবি: রয়টার্স।
পোশাক দেখেই যায় চেনা! নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সরাসরি পোশাক দিয়ে চিহ্নিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পশ্চিমবঙ্গের সীমানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ঝাড়খণ্ডের দুমকায় নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গে যে হিংসাত্মক বিক্ষোভ হচ্ছে বিরোধীরা তাকে পরোক্ষে প্রশ্রয় দিচ্ছে। যারা আগুন লাগাচ্ছে, টেলিভিশনে তাদের দেখা যাচ্ছে। পোশাক দেখেই তাদের চেনা যাচ্ছে।’’
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা ক’দিন ধরেই এই বিভাজনের চেষ্টা করছিলেন। নাগরিক আইনের বিরোধিতাকারীদের পাকিস্তান-পন্থী তকমা দিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারাও ধর্মের নামে বিভাজনের কৌশল নিয়েছিলেন। সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, গোটা পৃথিবী থেকে যদি মুসলিমেরা এসে ভারতের নাগরিকত্ব চান, তা দেওয়া সম্ভব নয়। উত্তর-পূর্বে হিংসার জন্য কংগ্রেসকে গত কালই সরাসরি দায়ী করেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া দেখে বোঝা যাচ্ছে, সংসদে নাগরিক বিল পাশ ঠিক কাজ হয়েছে। পাকিস্তান এত দিন যা করে গিয়েছে, কংগ্রেস এখন সেই কাজই করে চলেছে।’’
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনে লাভবান ক’জন? মিলছেই না হিসেব
মোদীর আজকের পোশাক-বার্তা টুইটার, ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির সাইবার কর্মীরা। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়বীর শেরগিলের কথায়, নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল সুরটিকে লঙ্ঘন করেছে বলেই কংগ্রেস তার বিরোধিতা করছে। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি যে মিথ্যা তথ্যের কারখানা চালায়, প্রধানমন্ত্রী তার সিইও। বিজেপির বিভাজন ও মেরুকরণের অপকৌশল প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যেও প্রকট হয়েছে।’’
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘অসমে গুলিতে নিহত বিক্ষোভকারীরা কী পোশাক পরে আছেন মিস্টার প্রধানমন্ত্রী? আগেও ন্যায্য আন্দোলনকে সাম্প্রদায়িক পোশাক পরিয়েছেন মোদী। এ বারও ব্যতিক্রম নয়। সরকারের অভিসন্ধিটাও বোঝা যাচ্ছে!’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটাই ওঁদের সংস্কৃতি! মানুষ কেন ক্ষিপ্ত, তা বোঝার চেষ্টা করছেন না। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনারও চেষ্টা নেই। প্রতিবাদ দেখে অসমকে বার্তা দিচ্ছেন অথচ বাংলা নিয়ে অন্য রকম বলছেন। এই কেন্দ্রীয় সরকার শুধুই বিভাজনে বিশ্বাসী।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা এমন কথা বলছেন, যা সাংবিধানিক পদে বসে বলা যায় না। অসম, ত্রিপুরায় কারা প্রতিবাদ করছে, প্রধানমন্ত্রী জানেন?’’