—ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, দু’জনেই পরস্পরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বাংলার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সংঘাতের আবহে এর মধ্যে রাজনীতির অঙ্কও দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরে মুখোমুখি বৈঠকে কেন্দ্রের কাছে টাকা না চাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠ নবীন। তাঁর যুক্তি ছিল, আর্থিক ভারে জর্জরিত কেন্দ্রের উপরে বোঝা বাড়াতে চান না। তবে রাজ্যের উপকূলে বিপর্যয় মোকাবিলায় পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের কাছে সাহায্য দাবি করেছেন তিনি। টাকার অঙ্কে সে বড় কম না। এবং ঘূর্ণিঝড়ের সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি আকাশপথে পরিদর্শনের পরে বাংলা এবং ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি ওডিশাকেও ৫০০ কোটি টাকা ত্রাণ ঘোষণা করেছেন মোদী।
এর পর আজ সকালে টুইট করে মোদী নবীনের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ পর্যালোচনা বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বিপর্যয় মোকাবিলায় নবীনের দুর্দান্ত কাজকে স্বীকৃতি দিয়ে আগামীতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেন। নবীনও জবাবে মোদীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের পুনর্গঠনের কথা বলে আগামী দিনে দীর্ঘ পথ একসঙ্গে পাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
রাজ্য এবং কেন্দ্রের দুই শীর্ষ নেতার এই পারস্পরিক ‘বোঝাপড়া’য় অবশ্য অবাক হচ্ছেন না অনেকেই। নরেন্দ্র মোদীকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার পরে বিহারের নীতীশের মতো নবীনও বিরোধিতায় বেঁকে বসেছিলেন। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের কিছু দিন পর থেকেই এনডিএ-র পুরনো শরিক বিজেডি-র নেতা নবীন ক্রমশ মোদীর দিকে ঝুঁকে পড়েন। নীতীশের মতো সরাসরি এনডিএ-তে যোগ না দিলেও মোদী বিরোধিতায় তিনি বা তাঁর দল পরবর্তী সাত বছরে সরব হননি। সংসদের ভিতরে-বাইরে বিজেপির সঙ্গে তালমিল বজায় রেখেই চলেছেন। রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারই প্রতিদান হিসেবে না চাইতেই ৫০০ কোটি টাকা ত্রাণ জুটেছে ওডিশার কপালে। সেই সঙ্গে পড়শি রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে নবীনের দৃষ্টান্তকে তুলে ধরে পালে হাওয়া টানতে চাইছেন মোদী।