নারায়ণ মূর্তি। —ফাইল চিত্র।
জরুরি অবস্থার পর থেকে দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপর পর্যাপ্ত জোরই দেওয়া হয়নি। মত ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের রেওয়াজের পক্ষে। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। এ বার দেশের জনসংখ্যা নিয়ে মন্তব্য মূর্তির। তাঁর মতে, বর্তমানে দেশের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। জরুরি অবস্থার পর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দিকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও মনে করছেন তিনি।
রবিবার প্রয়াগরাজে মতিলাল নেহরু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বলেন, “জনসংখ্যা, মাথা পিছু জমি ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ভারত একটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। জরুরি অবস্থার পর থেকে আমরা ভারতীয়রা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দিকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিইনি। যা দেশকে মজবুত হওয়ার পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে।” বক্তৃতা করার সময় আমেরিকা, ব্রাজিল ও চিনের উদাহরণও টেনে আনেন নারায়ণ মূর্তি। তাঁর দাবি, এই দেশগুলিতে জনসংখ্যার নিরিখে মাথা পিছু জমি ভারতের তুলনায় অনেক বেশি।
উল্লেখ্য, ভারতে বর্তমান জনসংখ্যা ১৪০ কোটির উপরে। ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটি। সম্প্রতি পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রক থেকে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। ‘উইমেন অ্যান্ড মেন ইন ইন্ডিয়া ২০২৩’ শীর্ষক ওই সরকারি রিপোর্টে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০৩৬ সালের মধ্যে দেশের জনসংখ্যা ১৫২ কোটি ছাপিয়ে যেতে পারে।
এর আগে তিনি দেশের যুব সমাজকে সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের রেওয়াজের কথা বলেছিলেন। রবিবার সরাসরি সেই প্রসঙ্গে না গেলেও, দেশের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষকে কঠোর পরিশ্রমের জন্য আহ্বান জানান তিনি। মূর্তি বলেন, “দেশের উন্নতিতে এই অবদান নির্ভর করে উচ্চাকাঙ্খা, বড় স্বপ্ন দেখা এবং সেই স্বপ্নগুলিকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার উপর।”
তাঁর বক্তব্য, পরবর্তী প্রজন্মের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য একটি প্রজন্মকে আত্মত্যাগ করতেই হয়। প্রসঙ্গত, যখন তাঁর ‘সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজে’র পরামর্শ ঘিরে চারদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল তখনও মূর্তি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি সপ্তাহে ৮৫-৯০ ঘণ্টা কাজ করতেন।