মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। — ফাইল চিত্র।
মণিপুরে শান্তি ফেরাতে তৎপর রাজ্য সরকার। এন বীরেন সিংহ সরকারের কাছে রাজ্যের জাতি সংঘর্ষ আটকানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তার মধ্যেই রাজ্যে অনুপ্রবেশ এবং অবৈধ বসবাস ঠেকানোও প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ১৯৬১ সালের পর যাঁরা মণিপুরে এসে থাকছেন, তাঁদের রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র মায়ানমার থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং মাদক মাফিয়ারাই মণিপুরের চলমান অশান্তির জন্য দায়ী। তাই অনুপ্রবেশকারী আটকানোর পাশাপাশি, যাঁরা অবৈধ ভাবে রাজ্যে বসবাস করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে ‘নির্বাসিত’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মণিপুরের ‘ইনার লাইন পারমিট সিস্টেম’কে কার্যকরী করতেই ১৯৬১ সালকে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ওই সালের পর যাঁরা রাজ্যে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে নির্বাসিত করা হবে।’’ ২০২২ সালের জুন মাসে মণিপুর মন্ত্রিসভায় একটি প্রস্তাব পাশ হয়। সেই প্রস্তাবেই ১৯৬১ সালকে নির্দিষ্ট করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মণিপুরের হিংসা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এখন তা পেরিয়ে এসেছি। আমাদের বাঁচতে হবে। নিজের পরিচিতি রক্ষার লড়াই আমরা করে চলেছি। এটা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।’’ নাগা নেতা এবং ‘ফোরাম ফর রিস্টোরেশন অফ পিস’-এর আহ্বায়ক অশাং কাশারের মতে, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নির্বাসিত করা সরকারের একার কাজ নয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাশার বলেছেন, ‘‘অভিবাসীদের শনাক্তকরণ করা খুবই জরুরি। যাঁরা অবৈধ অভিবাসী হিসাবে চিহ্নিত হবেন, তাঁদের রাজ্যের মূল বাসিন্দাদের অধিকার ভোগ করার ক্ষমতা থাকা ঠিক নয়। ভোটাধিকার থাকাও উচিত নয়।’’ ভারত-মায়ানমার সীমান্তে অবাধ চলাচল বন্ধ করতে কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছর মে মাস থেকে জাতি সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। বার বার এই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত জাতি সংঘর্ষে ১৮০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। চলতি বছরেও পুরোপুরি শান্তি ফেরেনি মণিপুরে। এই আবহের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।