কেরালা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
ইসলামি আইনে মহিলাদের বিবাহ বিচ্ছেদ চাওয়ার অধিকার আছে বলে রায় দিল কেরালা হাই কোর্ট। বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক ও বিচারপতি সি এস ডায়াসের বেঞ্চ জানিয়েছে, স্ত্রীর এই অধিকারের সঙ্গে স্বামীর ইচ্ছের কোনও সম্পর্ক নেই। স্বামী বিচ্ছেদ না চাইলেও স্ত্রী চাইতে পারেন।
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ আইনে বিচ্ছেদের ডিক্রি পেয়েছিলেন এক মহিলা। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন তাঁর প্রাক্তন স্বামী। আবেদনে তিনি জানান, মুসলিম মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদ চাওয়ার অধিকার আছে ঠিকই। কিন্তু একতরফা ভাবে ইসলামি আইনে বর্ণিত ‘খুলা’-র মাধ্যমে বিচ্ছেদ চাওয়ার অধিকার নেই। এই অধিকার বিশ্বের কোনও দেশেই স্বীকৃত নয়। বিচ্ছেদ পেতে গেলে তাঁকে তালাক চাইতে হবে। স্বামী রাজি না হলে কোর্ট বা কাজির কাছে যেতে হবে।
হাই কোর্ট রায়ে জানিয়েছে, ‘‘এই আবেদনে মুসলিম মহিলাদের তাঁদের পুরুষ সঙ্গীর অধীন বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। এই ধারণার পিছনে মুসলিম ধর্মগুরু ও ওই সম্প্রদায়ের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব রয়েছে বলে মনে হয়। সেই মনোভাব মহিলাদের খুলার মাধ্যমে একতরফা বিচ্ছেদ চাওয়ার অধিকারকে মানতে রাজি নয়।’’ বিচারপতিদের মতে, ‘‘এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর দিক থেকে বিচ্ছেদ চাওয়ার অন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই স্বামীর সম্মতি ছাড়াই খুলার মাধ্যমে বিচ্ছেদে সম্মতি দিতে পারে আদালত।’’
হাই কোর্টের মতে, খুলা বৈধ হওয়ার তিনটি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, স্ত্রীকে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হওয়ার কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানাতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিয়ের সময়ে পাওয়া জিনিস ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিতে হবে। তৃতীয়ত, বিচ্ছেদের আগে সমস্যা মেটানোর উপযুক্ত চেষ্টা যে হয়েছে, তার প্রমাণ থাকতে হবে।