পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ করল নিগৃহীতের পরিবার। ছবি: সংগৃহীত।
মোবাইল ফোন চুরির দায় চাপিয়ে এক মুসলিম যুবককে মারধরের অভিযোগ। তাঁকে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের ঘটনা। গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করে রেখেছিলেন অভিযুক্তেরা। সেই ভিডিয়োর সাহায্যে তিন অভিযুক্তের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুসলিম যুবকের আরও অভিযোগ, প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
ঘটনা ১৩ জুনের। অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপারকে অভিযোগ জানানোর পর শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। কাকোড় থানায় দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, ১৩ জুন বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন সাহিল নামে ওই যুবক। তিন জন বাইকে চেপে এসে সাহিলকে তাঁদের সঙ্গে ফাঁকা একটি নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তাঁকে মোবাইল চুরি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। অভিযুক্তেরা এর পর সাহিলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর শুরু করেন। যুবকের মাথাও কামিয়ে দেয়। তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করে গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করেন অভিযুক্তেরা, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে।
এর পর সেখান থেকে কোনও মতে পালিয়ে থানায় আসেন সাহিল। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে অস্বীকার করে। উল্টে তাঁকে চোর দাগিয়ে গ্রেফতার করে। সাহিল এবং তাঁর পরিবারের দাবি, তাঁদের অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপও দেওয়া হয়েছিল। ১৭ জুন অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন সাহিল এবং তাঁর পরিবার। নিগ্রহের ভিডিয়ো দেখিয়ে নিজেদের অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ দেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর পরেই তিন অভিযুক্তের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বুলন্দশহরের অ্যাসিসট্যান্ট সুপার এসেন তিওয়ারি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো দেখে জানতে পারি, এলাকার একটি ছেলেকে চুরির সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। যুবকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
যদিও গ্রেফতারির পরেও উদ্বেগ কমেনি সাহিলের পরিবারের। সাহিলের মা নুর বানু বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা প্রভাবশালী। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা গরিব। আমার ছেলে রঙের মিস্ত্রি।’’ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাহিলের বাবা শাকিলও।