মধ্যবয়সী ব্যক্তিকে রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। মারধরের পাশাপাশি তাঁকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতেও বাধ্য করা হয়। ছবি সংগৃহীত
বাবাকে জড়িয়ে ধরে ছিল একরত্তি মেয়েটি। যাতে নিগ্রহকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। পর ক্ষণেই দেখা যায় এক নিগ্রহকারীর কাছে ছুটে যাচ্ছে সে। হাত জোড় করে অনুনয় করছে তার বাবাকে যাতে রেহাই দেওয়া হয়। উল্টে তার হতে ধরে টেনে সরিয়ে দেওয়া হল। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের কানপুরের। ঘটনাপ্রবাহের যে ভিডিয়োটি সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এক মধ্যবয়সী ব্যক্তিকে রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মারধরের পাশাপাশি তাঁকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতেও বাধ্য করা হচ্ছে।
কানপুরের ওই নিগৃহীত ব্যক্তি পেশায় ই-রিকশাচালক। তাঁকে রাস্তা দিয়ে ও ভাবে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের হাতে তুলে দেয় মারমুখী জনতা। পরে দেখা যায় পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীনও তাঁকে আঘাত করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ওই রিকশাচালকের অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। যদিও ঘটনাটির পর বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এই ঘটনার কিছু ক্ষণ আগে ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে বজরং দলের একটি জমায়েত হয়। সেই জমায়েতে এক স্থানীয় মুসলিম পরিবারের বিরুদ্ধে এক হিন্দু কন্যাকে ধর্মান্তরণের অভিযোগ ওঠে। নিগৃহীত ব্যক্তির সঙ্গে ওই পরিবারের আত্মীয়তা রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশকে ওই ই-রিকশাচালক নিজের অভিযোগে জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ তিনি যখন কাজ করছিলেন, তখন তাঁর উপর হামলা হয়। তাঁকে রিকশা থেকে নামিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। মারধরও করা হয়। পুলিশের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে ওই ব্যক্তি লিখেছেন, ‘ওরা আমাকে আর আমার পরিবারকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল।’
এ বিষয়ে কানপুর পুলিশের তরফে এক বিবৃতিতে রবিনা ত্যাগী নামে এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ‘আমরা ভিডিয়োটি দেখেছি। নিগৃহীত ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছি। আইনি পথেই পদক্ষেপ করা হবে।’
ভিডিয়োটি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নেটাগরিকদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন নিগ্রহকারীদের মুখ স্পষ্ট দেখা গেলেও তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি? পুলিশ তার জবাব দেয়নি। তারা শুধু জানিয়েছে, ১২ জন অভিযুক্তের মধ্যে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে রয়েছেন। বাকি ১০ অভিযুক্তের পরিচয় জানা যায়নি।