অযোধ্যায় রামচন্দ্রের মূর্তি। ছবি: রয়টার্স
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মসজিদের জন্য পৃথক ৫ একর জমির খোঁজ শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু, ভিন্ন সুর মামলার অন্যতম প্রধান পক্ষ ইকবাল আনসারির গলায়। তাঁর দাবি, বাইরে নয়, অযোধ্যার অধিগৃহীত ৬৭ একরের মধ্যেই মসজিদের জন্য ৫ একর জমি দেওয়া হোক। ইকবালের সুরে সুর মেলাচ্ছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ।
সূত্রের খবর, মসজিদের জন্য জমির সন্ধান চালাচ্ছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। উত্তরপ্রদেশের এক সরকারি কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় জায়গায় মসজিদের জন্য জমি খুঁজতে বলা হয়েছে।’’ কিন্তু, এই জমি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সংখ্যালঘুরা। ইকবাল আনসারি দাবি তুলেছেন, ‘‘যদি আমাদের জমি দিতে হয় তা হলে আমাদের সুবিধামতো মূল ৬৭ একরের মধ্যেই দিতে হবে। তা হলেই আমরা জমি নেব। তা না হলে আমরা এই প্রস্তাব মানব না। অনেকে বলছে, চোদ্দ ক্রোশ দূরে গিয়ে মসজিদ পড়। এটা ঠিক নয়।’’ শুধু ইকবাল আনসারিই নয়, একই দাবি উঠে আসছে, অযোধ্যার অনেক মুসলিম বাসিন্দার কথাতেই। এ নিয়ে কিছুটা ক্ষোভের সুর শোনা গেল মামলার অন্যতম পক্ষ হাজি মেহবুবের কথায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা এই ললিপপ নেব না। তাদের স্পষ্ট করে দিতে হবে যে, তারা আমাদের ঠিক কোথায় জমি দিতে চায়।’’
সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার আগে পর্যন্ত, গোটা দেশের কাছেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল অযোধ্যা। সেখানে মন্দিরের জন্য জমি নির্ধারিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, মসজিদ কোথায় হবে? কারণ, মসজিদের জন্য ৫ একর জমি দেওয়ার কথা বলা হলেও, তা অযোধ্যার কোথায় দেওয়া হবে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি শীর্ষ আদালতের এক হাজারেরও বেশি পাতার ওই রায়ে। তাই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে সংখ্যালঘুদের একাংশের মধ্যে। ফলে, উঠে আসছে নানা প্রশ্নও। অযোধ্যার বাসিন্দা মওলানা জালাল আশরফের বক্তব্য, ‘‘মুসলিমরা জমি কিনে মসজিদ গড়তে পারে। এ জন্য সরকারের উপর নির্ভর করতে হবে না। সরকার যদি আমাদের সান্ত্বনা দিতে চায় তা হলে ওই ৫ একর জমি অধিগৃহীত জমির ভিতরেই দেওয়া হোক। কারণ, ওই এলাকায় অঠেরোশো শতকের সুফি সাধক কাজি কুদওহার দরগা-সহ অনেকের কবরও রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: জেএনইউ: হস্টেল ফি বৃদ্ধি নিয়ে পিছু হঠল কর্তৃপক্ষ, পুরো প্রত্যাহারের দাবি পড়ুয়াদের
আরও পড়ুন: অযোধ্যার পর শবরীমালা-রাফাল, কাল আরও দুই গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দেবেন প্রধান বিচারপতি
একই কথা বলছেন অল ইন্ডিয়া মিলি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক খালিক আহমেদ খানও। জমিয়ত উলেমা হিন্দের অযোধ্যার প্রেসিডেন্ট মওলানা বাদাহ খানের কথায়, ‘‘মুসলিমরা বাবরি মসজিদের পক্ষে লড়ছিল, কোনও জমির জন্য নয়।’’ কিছুটা ভিন্ন সুর শোনা গেল সমাজকর্মী ইউসুফ খানের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থনা করার জন্য আমাদের অনেক মসজিদ আছে। কিন্তু, শীর্ষ আদালত রামমন্দিরের পক্ষেই রায় দিয়েছে।’’’