—প্রতীকী চিত্র।
বছর কুড়ি আগে হোটেলের ঘরে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকেই খোঁজ চলছিল খুনে অভিযুক্তের। অভিযোগ, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গত কুড়ি বছরে বার বার নাম-পরিচয় থেকে পেশা বদল করেছেন তিনি। অবশেষে ঠাণে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৩ সালে মুম্বইয়ের একটি হোটেলে দীপক রাঠৌর (২৩) নামে কাপড়ের ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগে ঠাণের একটি মিষ্টির দোকানের কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, পুলিশের নজর এড়াতেই মিষ্টির দোকানে কাজ নিয়েছিলেন ৪৩ বছরের রূপেশ রাই। দীপকের সঙ্গে মুম্বইয়ের ওই হোটেলে উঠেছিলেন তিনি। সেখানেই দীপককে খুনের পর গা-ঢাকা দেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কুড়ি বছর আগে দীপকের সঙ্গে ভিলে পার্লের একটি হোটেলে এসেছিলেন রূপেশ। আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও দীপকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল নয়াদিল্লিতে। ব্যবসা বাড়ানোর খাতিয়ে মুম্বইয়ে কাঁচামাল কিনতে এসেছিলেন দীপক। তাঁর সঙ্গে ছিল ১ লক্ষ ৩ হাজার টাকা। তদন্তকারীদের দাবি, দীপককে খুনের পর ওই টাকা নিয়ে বিহারে চম্পট দেন রূপেশ। এর পর থেকে বার বার নাম-পরিচয় বদল করেছেন। পুণে, গোয়া, রাঁচী থেকে গুজরাত হয়ে ঠাণেয় গা-ঢাকা দিয়ে থেকেছেন। এমনকি, ২০১৬ সালে আধার কার্ড তৈরির জন্য অতুল কেডিয়া নামে আবেদনও করেছিলেন। কখনও মুম্বইয়ে বাস কন্ডাক্টর হিসাবে কাজ করেছেন। কখনও বা ঠাণের মিষ্টির দোকানে কাজ নিয়েছেন। গত কুড়ি বছরে পুলিশ তাঁর বিহারের বাড়ির আশপাশে ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও রূপেশকে ছুঁতে পারেনি।
মুম্বই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সত্যনারায়ণ রবিবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘খুনের তদন্তে নেমে অভিযুক্তের বিহারের বাড়িতে ১৫-১৬ বার গিয়েছে সান্তাক্রুজ় থানার পুলিশ। তবে বিহারের প্রত্যন্ত এলাকায় তাঁর প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব থেকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেও রূপেশ রাইয়ের খোঁজ মিলছিল না।’’ গত মাসে অবিবাহিত রাইয়ের সম্পর্কে বড়সড় সূত্র পায় মুম্বই পুলিশ। সেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার ঠাণের একটি মিষ্টির দোকানে পৌঁছয় তারা। কুড়ি বছর পর সেখানেই ধরা পড়েন রাই।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় রাই স্বীকার করেছেন, দিল্লিতে তাঁকে গাড়ি চালানো শিখিয়েছিলেন দীপক। সেখানেই একটি মোটর ট্রেনিং স্কুল খোলার ইচ্ছা ছিল। তবে দিল্লিতে নিজের ব্যবসা বাড়াতে দীপক তাঁকে জোর করে মুম্বই নিয়ে যান। সেখানে একটি হোটেলে খাওয়ার সময় দু’জনের মধ্যে তা নিয়ে বচসা হয়েছিল। তর্কাতর্কির সময় খাওয়ার ছুরি এবং কাঁটাচামচ দিয়ে দীপককে খুন করেন তিনি।