বম্বে আইআইটির পড়ুয়া দর্শন সোলাঙ্কির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার বন্ধু। — ফাইল ছবি।
মুম্বই পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল রবিবার আরমান খাত্রী নামে এক প়ড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বম্বে আইআইটির ছাত্র দর্শন সোলাঙ্কিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আরমানও বম্বে আইআইটির ছাত্র। ছাত্রাবাসে দর্শন এবং আরমান একই তলে থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। দর্শন সুইসাইড নোটে লিখেছিলেন, ‘‘আরমান, তুমিই আমাকে মেরে ফেললে।’’
এক প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আরমানকে আগেই ডেকে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু আরমান পুলিশের সামনে মুখ খুলছেন না। এই কারণে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হল বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কোনও কারণে আরমানের সঙ্গে দর্শনের ঝামেলা চলছিল।
পুলিশ দর্শনের আত্মহত্যার মামলার তদন্তে নেমে তাঁর একাধিক সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলেছে। তা থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, আত্মহত্যার ঘটনার ঠিক ৫ দিন আগে আরমানের জাত তুলে কিছু মন্তব্য করেছিলেন দর্শন। যা ভাল ভাবে নেননি আরমান। তার পর থেকেই ভয়ে ভয়ে থাকতেন দর্শন। তাঁর বন্ধুদের দাবি, বিষয়টি মিটমাট করে নিতে দর্শন ও আরমান রাগ ভুলে দু’জন দু’জনকে জড়িয়েও ধরেন। কিন্তু দর্শনের ভয় যায়নি। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, দর্শন হোস্টেল থেকে আমদাবাদের বাড়িতে চলে যেতে চেয়েও পারেননি। কারণ, আরমানের নিকটাত্মীয়দের বাড়িও একই শহরে। তাই বাড়ি ফিরলেও মার খাওয়ার ভয় থেকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দর্শন একদিন আত্মঘাতী হন।
সেই সময় দর্শনের পরিবারের দাবি ছিল, দর্শনকে তাঁর জাত তুলে অপমান করা হত। সেই যন্ত্রণা থেকেই দর্শন নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও দর্শনকে তাঁর জাত তুলে কেউ অপমান করেছেন এমন ঘটনার কথা তাঁর বন্ধুরাও মানেননি। পুলিশও এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে জাত তুলে অপমানের প্রসঙ্গ খুঁজে পায়নি।
এই সময় মামলার তদন্তভার যায় সিটের কাঁধে। তারাই গত ৩ মার্চ দর্শনের ঘর খুঁজে একটি সুইসাইড নোট পান। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আরমান, তুমিই আমাকে মেরে ফেললে।’’ সিটের তদন্তকারীরা সেই সুইসাইড নোটটি ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠান। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা রিপোর্টে জানান, হাতের লেখাটি দর্শনেরই। তার পরেই আরও ভাল ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বম্বে আইআইটির পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল সিট।