ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিধানসভা ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের দলত্যাগ সংক্রান্ত অভিযোগের ফয়সালা করে ফেলবে বলে বলে আশাবাদী সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতে এই বিষয়ে মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই। বিজেপির আইনজীবীদের দাবি, সর্বোচ্চ আদালতের ‘আশাপ্রকাশ’ করার অর্থ— ওই সময়ের মধ্যে বিধানসভা কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে এই বিষয়ে আদালতই হস্তক্ষেপ করতে পারে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আদালতের নথি না দেখে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বি ভি নাগারত্নের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার বিধানসভার স্পিকারের দায়ের করা আবেদনের শুনানিতে মন্তব্য করেছেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে মুকুল-মামলার কোনও নিষ্পত্তি বিধানসভায় হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। বিজেপির বিধায়ক অম্বিকা রায় বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদে ‘দলত্যাগী’ মুকুলকে বসানোর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। স্পিকারকে মুকুলের দলত্যাগ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছিল হাই কোর্ট। বিধানসভার এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়ে এই ভাবে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না, এই মর্মে স্পিকারের তরফে আবেদন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনেরই শুনানি ছিল সোমবার। আইনজীবী, কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঙভি ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান। বিজেপির আইনজীবী আগামী সপ্তাহেই শুনানি চেয়েছিলেন। বিচারপতি রাও অবশ্য সিঙ্ঙভিকে বলেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই শুনানি করা হবে। তার মধ্যে বিধানসভায় বিষয়টার যাতে ফয়সালা হয়, সিঙ্ঙভি তা দেখুন।
স্পিকার বিমানবাবু বিধানসভায় কাল, বুধবার মুকুলের দলত্যাগ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করে রেখেছেন গত সপ্তাহেই। বিজেপি অবশ্য এই গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে ‘সময় নষ্টের কৌশল’ দেখছে। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেছেন, ‘‘বিধানসভায় মাননীয় স্পিকার এবং যাঁর বিরুদ্ধে মামলা, তাঁরা ইচ্ছা করে টানছেন! এর আগে তৃণমূলে বহু লোক এসেছিলেন, তখন স্পিকার সিদ্ধান্ত নেননি। আমরা বলেছিলাম, যাঁরা দল ছেড়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।’’ দিলীপবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘আদালতকে ওঁরা ফাঁকি দিচ্ছেন! সত্য সামনে আনা উচিত। তাঁকে দলের পদাধিকারী ঘোষণা করা হল, অথচ ওয়েবসাইটে বলা হল, তিনি বিজেপির সদস্য! এটা দ্বিচারিতা। রাজনীতির পতন এ ভাবেই শুরু হয়। সিনিয়র নেতার কাছ থেকে লোকে এ রকম আশা করে না।’’ তৃণমূলের তরফে উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায় যদিও বলেছেন, বিধানসভা ও আদালতে শুনানি যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে বাইরে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।