মুখতার আব্বাস নকভি। ফাইল চিত্র।
বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির ভবিষ্যত নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহতই রইল। প্রথমে রাজ্যসভা, তার পরে লোকসভার উপনির্বাচনেও তাঁর টিকিটের শিকে ছিঁড়ল না। ফলে আগামী বাদল অধিবেশনে সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির তরফে কোনও মুসলিম সাংসদকে দেখা যাবে না।
আজ বিজেপির উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা দেখে স্বভাবতই রাজনৈতিক শিবিরে ফের জল্পনা, সম্ভবত উপরাষ্ট্রপতির মতো কোনও সাংবিধানিক পদেই নকভিকে বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কারণে তাঁকে রাজ্যসভা কিংবা উত্তরপ্রদেশে আসন্ন লোকসভার উপনির্বাচনে টিকিট দেয়নি দল। অনেকেই মনে করছিলেন, সমাজবাদী নেতা আজ়ম খানের পদত্যাগের ফলে খালি হওয়া উত্তরপ্রদেশের রামপুর আসনের উপনির্বাচনে নকভিকে প্রার্থী করতে পারে দল। নকভির মতো সংখ্যালঘু প্রার্থীকে সামনে রেখে আজ়ম খানের মৌরসিপাট্টা ভাঙার পরিকল্পনা নিতে পারেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু আজ যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে রামপুর থেকে বিজেপির টিকিট পেয়েছেন ঘনশ্যাম লোধী। ফলে নকভিকে উপরাষ্ট্রপতি করা হবে কি না, সেই জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে।
রাজনীতিকদের অনেকের মতে, মোদী সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, বঞ্চনার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অনেকটাই মোকাবিলা করা যাবে সংখ্যালঘু কোনও প্রার্থীকে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা গেলে। এতে বিশ্বের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতেও সক্ষম হবে ভারত। যদিও এ নিয়ে এখনই স্পষ্ট কিছু জানাতে চাননি বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, ‘‘নকভি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই কেবল নন, দলের গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু মুখ। দলের নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।’’
উঠে এসেছে অন্য বিকল্পের জল্পনাও। রাজ্যসভা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মেয়াদ শেষ হলে তাঁকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হয়। সেই হিসাবে ছয় মাস এখনও সময় রয়েছে নকভির কাছে। আগামী দিনে কোনও আসন খালি হলে সেখান থেকেও জিতিয়ে আনা হতে পারে। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দিক থেকে সেই পথে হাঁটার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আপাতত নকভির টিকিট না পাওয়ায় একটি বিষয় স্পষ্ট, আসন্ন বাদল অধিবশনে সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির কোনও মুসলিম সাংসদ থাকছেন না। লোকসভায় বিজেপির কোনও সংখ্যালঘু সাংসদ এমনিতেই নেই। এ বার রাজ্যসভাতেও কোনও মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দেয়নি দল। ফলে অথচ সদ্য-সমাপ্ত বাজেট অধিবেশনেও নকভি ছাড়াও এম জে আকবর ও বিজেপি মুখপাত্র সৈয়দ জাফর ইসলাম— মোট তিন জন সাংসদ ছিলেন। তিন জনের কাউকেই রাজ্যসভায় ফিরিয়ে তো আনা হলই না, পরিবর্তে অন্য কোনও সংখ্যালঘু মুখকেও বেছে নেওয়া হল না। পরিস্থিতি যা, তাতে বর্তমানে গোটা এনডিএ শিবিরে মাত্র এক জন মুসলিম সাংসদ রয়ে গেলেন। তিনি হলেন বিহারের খাগাড়িয়া আসনের সাংসদ, লোক জনশক্তি পার্টির নেতা মেহবুব আলি কাইজ়ার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।