প্রজ্বল রেভান্না। ছবি: পিটিআই।
বেঙ্গালুরুতে পা দেওয়া মাত্রই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জনতা দল পার্টির (জেডিএস) নেতা তথা হাসনের প্রার্থী প্রজ্বল রেভান্না। গ্রেফতারির পর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ৬ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিলেন। ঘটনাচক্রে, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হবে।
শতাধিক মহিলাকে ধর্ষণ-যৌন নিগ্রহের অভিযোগ রয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নাতি প্রজ্বলের বিরুদ্ধে। ভোটের ঠিক আগে হাজার তিনেক যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়ে তাঁর লোকসভা কেন্দ্র হাসনে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে প্রায় ১টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে নামে জার্মানির মিউনিখ থেকে আসা লুফৎহানসার উড়ান। ওই উড়ানেরই যাত্রী ছিলেন প্রজ্বল। বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরুতে সিটের অফিসে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পর হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। গ্রেফতারির পর প্রজ্বল জানান, তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতেই দেশে ফিরেছেন তিনি। তাঁর আইনজীবী সংবাদমাধ্যমে বলেন, “প্রজ্বল আমাকে বলেছেন, তিনি বেঙ্গালুরুতে ফিরেছেন। কারণ, তিনি নিজের কথা রাখতে চান। তিনি আইনের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তিনি এ-ও বলেছেন যে, বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর সঙ্গে তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে চান।”
‘অশ্লীল’ ভিডিয়োকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর পরই দেশ ছাড়েন প্রজ্বল। ‘পলাতক’ জেডিএস নেতাকে দেশে ফেরানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ করে কর্নাটক সরকার। প্রজ্বলের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের কাছে অনুরোধও করে সিদ্দারামাইয়া সরকার। প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লেখেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে খুঁজতে ব্লু কর্নার নোটিসও জারি করা হয়।
তবে দিন কয়েক আগে প্রজ্বল নিজেই জানান, তিনি সিটের মুখোমুখি হবেন। ৩১ মে সকাল ১০টার সময় যাবেন সিটের দফতরে। একই সঙ্গে তিনি এ-ও অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। এর নেপথ্যে তাঁর লোকসভা কেন্দ্র হাসনেরই কেউ কেউ জড়িত আছেন বলে অভিযোগ করেন।
বুধবার জানা যায়, মিউনিখ থেকে বিমানে চড়েছেন প্রজ্বল। এসে পৌঁছবেন বৃহস্পতিবার মাঝরাতে। বেঙ্গালুরুতে প্রজ্বলের বিমান অবতরণের খবর পেয়েই প্রস্তুত ছিল ন’সদস্যের সিট। তারা ছাড়াও ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে স্থানীয় পুলিশের একটি দল, কর্নাটক রিজ়ার্ভ পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল বিমানবন্দরে। প্রজ্বল পৌঁছনোর পরে তাঁর ছবি যাতে তুলতে না পারেন, সেই জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে বিমানবন্দরে কর্মরত গ্রাউন্ড স্টাফদের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়াও নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছে শহরের বিভিন্ন অংশে।