করোনায় বয়সভিত্তিক আক্রান্তের তালিকা দিল কেন্দ্র। —প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি কাদের? মৃত্যুর হার বেশি কোন বয়সের মানুষের? কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সের মানুষের মধ্যে। এই বয়সের তরুণ ও যুবকরাই দেশের মোট আক্রান্তের মধ্যে অর্ধেকের বেশি। মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। দেশে মোট মৃত্যুর মধ্যে এই প্রবীণরাই ৫১ শতাংশ। এই বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে ৪৫ থেকে ৬০ বছরের বয়সিদের ক্ষেত্রেও। তবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সবেচেয়ে কম শিশু-কিশোরদের মধ্যে।
শুধুমাত্র করোনার কারণে সারা দেশে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কিছু দিন পর থেকেই বিজ্ঞানী-গবেষকরা বলে আসছেন, কো-মর্বিডিটি অর্থাৎ অন্য শারীরিক সমস্যা থাকলে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যানেও কার্যত সেই বিষয়টিই স্পষ্ট হল। কারণ, এখনও পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বয়স ৬০ বছরের উপরে। ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩৬ শতাংশ। কিশোরদের ক্ষেত্রে মাত্র ১ শতাংশ। প্রবীণদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিকের মতো রোগ বেশি থাকে বলেই মৃত্যুর হার এত বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অথচ করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণ ও যুবকরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৬ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৪০ শতাংশ। আবার ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এই হার ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ ১৮ থেকে ৪৪ বয়সী আক্রান্তই দেশের মোট আক্রান্তের অর্ধেক। ৪৫ থেকে ৬০ এর মধ্যে ২৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি অর্থাৎ প্রবীণদের ক্ষেত্রে এই হার ১২ শতাংশ। অন্যদিকে ১৭ বছরের নীচে শিশু-কিশোরদের আক্রান্ত হওয়ার হার ৮ শতাংশ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: পাঁচ দিনে তিন হাজার কোটি পিএম কেয়ার্সে, কাদের টাকা, প্রশ্ন চিদম্বরমের
দেশে লকডাউন শুরু হয়েছিল ২৫ মার্চ। এই কো-মর্বিডিটির কথা মাথায় রেখেই প্রবীণদের ঘরের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছিল কেন্দ্রের নির্দেশিকায়। এখনও সেই নির্দেশিকা বলবৎ রয়েছে। কিন্তু যুবক ও তরুণদের ক্ষেত্রে বেশি আক্রান্ত হওয়ার যুক্তি হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বয়সের মানুষই সবচেয়ে বেশি বাইরে বেরোচ্ছেন। বেশি মানুষের সংস্পর্শে আসছেন। আবার প্রবীণদের উল্টো শিশুদের মধ্যে সাধারণত অন্য অসুস্থতা কম থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি থাকে। তা ছাড়া শিশুরা বাইরেও বেরোচ্ছে কম। সেই কারণেই শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কম।
আরও পড়ুন: বাদল অধিবেশনে সরকারকে কোনও প্রশ্ন নয়! গর্জে উঠল বিরোধী শিবির
আবার সরকারের অন্য একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। পুরুষদের মৃত্যুর হার ৬৯ শতাংশ। ২২ অগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ১৭ হাজার ৩১৫ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। পুরষের মৃত্যু হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৭৩ জনের। আবার ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে ৯০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের উপরে।