এক বছর সাংসদদের বেতন-অনুদানের ৩০ শতাংশ কমানো সংক্রান্ত বিল পাশ সংসদে। —ফাইল চিত্র
অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল আগেই। এ বার সংসদে পাশ হয়ে গেল মন্ত্রী-সাংসদদের বেতন, ভাতা ও পেনশন কমানো সংক্রান্ত বিল। পাশ হয়েছে সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল (এমপি-ল্যাড)-এর টাকা দু’বছর বন্ধ করার বিলও। সব দল বেতন-ভাতা কমানোর বিরোধিতা না করলেও এমপি-ল্যাডের টাকা কেটে নেওয়ায় আপত্তি তুলেছে সিংহভাগ বিরোধী দল। যদিও ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গিয়েছে দু’টি বিলই।
করোনা সংক্রমণের গোড়ার দিকে আর্থিক সঙ্কট সামাল দিতে মন্ত্রী-সাংসদদের এক বছরের জন্য বেতন ও ভাতার ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। এ ছাড়া এমপি-ল্যাডের টাকা দু’বছর বন্ধ করে কেন্দ্রীয় একটি তহবিল তৈরির সিদ্ধান্তের কথাও ওই সময় ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বছরের ৬ এপ্রিল জারি হয় এই সংক্রান্ত অধ্যাদেশ। করোনার সংক্রমণের জেরে এ বার পিছিয়ে গিয়েছে বাদল অধিবেশন। সোমবার থেকে কড়া কোভিড প্রোটোকল মেনে শুরু হয়েছে উভয় কক্ষের অধিবেশন।
লোকসভায় পাশ হওয়ার পর শুক্রবার এই সংক্রান্ত দু’টি বিলই রাজ্যসভায় পেশ হয়। সাংসদদের বেতন, অনুদান ও পেনশন সংক্রান্ত সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় পেশ করেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি পেশ করেন এই সংক্রান্ত মন্ত্রীদের বিল। এই দু’টি বিলে সাংসদ-মন্ত্রীদের কেউই আপত্তি তোলেননি। তবে এমপি-ল্যাড সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সরকার পক্ষকে। নিজের সাংসদ ক্ষেত্রের স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী এই টাকা থেকে উন্নয়নের কাজকর্ম করেন সাংসদরা। এক্কেবারে নিচুতলার মানুষের সঙ্গে জড়িত এই টাকা বন্ধ করা হবে কেন, প্রশ্ন ওঠে তা নিয়ে।
আরও পড়ুন: ‘কৃষি বিল নিয়ে মিথ্যা প্রচার চলছে’, মোদীর নিশানায় বিরোধীরা
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘বেতনের টাটায় অধিকাংশ সাংসদের সংসার চলে। তবু বেতন-অনুদানের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্তে আপত্তি নেই কারও। এর জন্য তাঁদের অভিনন্দন প্রাপ্য। তবে এমপি-ল্যাডের সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষ যুক্ত। এই খাতের টাকা দু’বছর বন্ধ রাখলে হলে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই আমজনতাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার অনুরোধ, এমপি-ল্যাডের অর্ধেক টাকা এক বছরের জন্য কাটা হোক। বাকি অর্ধেক সাংসদদের দেওয়া হোক আগের মতোই।’’
আরও পড়ুন: বরাত পেলে ট্রেনের ভাড়া ঠিক করতে পারবে বেসরকারি সংস্থা, জানাল রেল বোর্ড
বিল নিয়ে আলোচনার সময়েই উঠে এসেছে অনেক পরামর্শ-প্রস্তাবও। ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ প্রকল্পে নয়া সংসদ ভবন নির্মাণ-সহ রাজধানীর বিভিন্ন ভবন নতুন তৈরি অথবা আমূল সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। বুধবারই জানা গিয়েছে, সংসদ ভবন তৈরির বরাত পেয়েছে টাটা গ্রুপ। এই নিয়ে আরজেডি সাংসদ মনোজকুমার ঝা বলেন, এই প্রকল্প অতিমারির মধ্যেও আতিশয্যের মতো। প্রকল্প স্থগিত রাখার দাবিও জানান তিনি। করোনার জন্য এক বছর বেতন অনুদানে কোপের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে ওয়াইএসআরসিপি সাংসদ ভি বিজয়সাইয়ের প্রস্তাব, সংসদে হাজির না থাকলেও বেতন কাটা এবং জরিমানার ব্যবস্থা করা হোক। তবে মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, এই বিষয়গুলি বিলের অন্তর্ভুক্ত নয়।