বয়কটের পর রাজ্যসভায় ফাঁকা বিরোধীদের আসন। ছবি: পিটিআই
কৃষি বিল ঘিরে সরকারের উপর চাপ আরও বাড়াতে এ বার রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা করলেন বিরোধীরা। তিনটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা করেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। এই সিদ্ধান্তের পর সোমবার থেকে ধর্নায় বসা সাসপেন্ড হওয়া সাংসদরাও অনশন তুলে নিলেন। বিরোধীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে মঙ্গলবার এক দিনের অনশন পালন করবেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার।
কৃষি বিল ঘিরে সরকার-বিরোধী পক্ষের সঙ্ঘাত জারি মঙ্গলবারও। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে রাজ্যসভার অধিবেশনের বাকি দিনগুলি বয়কট করলেন বিরোধীরা। এ দিন সকাল ৯টায় রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই জিরো আওয়ারে বয়কটের ঘোষণা করেন আজাদ। তিনটি দাবি পেশ করেন তিনি। এই তিনটি দাবি পূরণ না হলে বিরোধী সাংসদরা যে অধিবেশনে ফিরবেন না, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। এর পর অধিবেশন কক্ষ থেকে একযোগে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী সাংসদরা।
বিরোধীদের তিন দাবির অন্যতম, ফিরিয়ে নিতে হবে আট সাংসদের সাসপেনশন। দ্বিতীয় দাবি, বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিনিধি কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনলে নূন্যতম সহায়ক মূল্যের কমে কিনতে পারবে না, এই ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বিলে। বিরোধীদের তৃতীয় দাবি, সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে এম এস স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে।
রাজ্যসভা বয়কটের পর সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের উদ্দেশে ধর্না তুলে অধিবেশন বয়কটে শামিল হওয়ার আর্জি জানান বিরোধী দলের সাংসদরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ধর্না তুলে নেন সাংসদরাও। ধর্নায় বসা তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের টুইট, ‘‘আপনারা সাসপেন্ড করতে পারেন, কিন্তু চুপ করাতে পারবেন না।’’ সাসপেন্ড কংগ্রেস সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন বলেন, ‘‘শুধু সাসপেনশন প্রত্যাহার নয়, আমরা চেয়েছিলাম, বিল ফিরিয়ে এনে ভোটাভুটি হোক। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। চেয়ারম্যান কারও কথা শুনতেই চাননি।’’
আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও
তার আগে মঙ্গলবার সকালে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের ধর্নাস্থলে চা নিয়ে হাজির হন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশনারায়ণ সিংহ। সেই চা বিস্কুট কেউ খাননি। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন ডেপুটি চেয়ারম্যান। তবে হরিবংশের এই প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সাংসদদের ব্যবহারে আমি মর্মাহত। যা ঘটেছে, তাতে আমি মানসিক চাপে রয়েছি। গত দু’দিন ঘুমোতে পারিনি।’’
আরও পড়ুন: সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে গণআন্দোলনে কংগ্রেস
উল্টো দিকে শাসক দলের পক্ষ থেকেও তৎপরতা জারি রয়েছে। সাংসদদের অভব্যতার প্রতিবাদে এক দিনের অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হরিবংশ। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘‘সাংসদদের ব্যবহারে আমি মর্মাহত। যা ঘটেছে, তাতে আমি মানসিক চাপে রয়েছি। গত দু’দিন ঘুমোতে পারিনি।’’ চেয়ারম্যানকে পুরো ঘটনা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে সবিস্তার চিঠিও লিখেছেন হরিবংশ।