ফাইল চিত্র।
নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাজের প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, যোগী জমানায় উত্তরপ্রদেশকে মানুষ এখন ‘এক্সপ্রেস প্রদেশ’ হিসেবে জানছে।
আজ বাবতপুর বিমানবন্দরে নেমেই খাজুরিতে পৌঁছন মোদী। সেখানে বারাণসী ও প্রয়াগরাজের মধ্যে জাতীয় সড়ক বিস্তার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। দাবি করেন, এই প্রকল্পের ফলে এখানকার মানুষের যাতাযাতের সমস্যারই শুধু সমাধান হবে না, কুম্ভমেলার সময়েও এটি বিরাট ভাবে কাজে আসবে। জাতীয় সড়ক ১৯-এর এই অংশের বিস্তার ৭৩ কিলোমিটার জুড়ে। ছয় লেনের সড়ক তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৪৪৭ কোটি টাকা। এই সড়ক প্রয়াগরাজ ও বারাণসীর মধ্যে যাতায়াতের সময় প্রায় এক ঘণ্টা কমিয়ে দেবে।
এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, যোগী জমানায় উত্তরপ্রদেশে পরিকাঠামোর বিকাশ ঘটেছে দারুণ ভাবে। মোদীর মন্তব্য, ‘‘২০১৭ সালের আগে রাজ্যে পরিকাঠামোর কী হাল ছিল, সকলেই জানেন। কিন্তু যোগীজি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে পরিকাঠামো নির্মাণে গতি এসেছে। মানুষ এখন উত্তরপ্রদেশকে এক্সপ্রেস প্রদেশ হিসেবে দেখছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর ওই অনুষ্ঠানে যোগী নিজেও উপস্থিত ছিলেন। তিনিও মোদীর প্রশংসা করে বলেন, ‘‘গত ছয় বছরে বারাণসীর উন্নতি হচ্ছে বিরাট ভাবে। এই সময়ের মধ্যে এখানে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে কাজ হয়েছে। এর কোনওটির উদ্বোধন হয়েছে, কোনও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।’’ মোদী পরে জেলার বিজেপি কর্মীদের সভাতেও উপস্থিত হন। কাশী বিশ্বনাথ টেম্পল করিডর প্রকল্পের কাজও দেখতে যান তিনি।
দেব দীপাবলি উপলক্ষে আজ কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে প্রার্থনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেব দীপাবলি মহোৎসবে গঙ্গার ঘাটগুলি আলো দিয়ে দারুণ ভাবে সাজানো হয়েছিল। টুইটারে সেই ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন মোদী। দেব দীপাবলি উৎসবকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী আজ চিন ও পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন, এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমি তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বিস্তারবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এবং যারা এই দেশকে টুকরো করতে চায়, অনুপ্রবেশে সাহায্য করে— তাদের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিয়েছে আমাদের দেশ।’’ পরে বারাণসীতে রবিদাস ঘাটে পৌঁছে সন্ত রবিদাসের মূর্তিতে মালা দেন তিনি।
মোদীর গোটা দিনের কর্মসূচির মধ্যে উন্নয়নের পাশাপাশি ধর্মীয় ভাবনা বড় জায়গা করে নিয়েছিল। সব শেষে বারাণসী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বৌদ্ধ ধর্মস্থান সারনাথে পৌঁছে গৌতম বুদ্ধের জীবন নিয়ে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’ দেখেন তিনি। তবে রাজধানীতে কৃষকেরা যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, কনকনে ঠান্ডায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ কৃষকেরাও, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শুধু মুখে বার্তা না-দিয়ে কেন আরও সক্রিয় হচ্ছেন না, সেই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটনাগরিকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, কৃষকদের সমস্যা সমাধানে দ্রুত বৈঠকের ব্যবস্থা না করে প্রধানমন্ত্রী গিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখবেন, নাচ-গানের সঙ্গে হাতে তাল দেবেন, এ কেমন কথা? তাঁরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নিজস্ব কর্মসূচি থাকবেই, তবে বাহ্যিক আচরণে ‘সংবেদনশীলতা’ও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত ছিল।