বৈঠকের পরে মোদী বলেন, “এখনও গোটা বিশ্ব কোভিডের সঙ্গে যুঝছে। তার উপর ভূকৌশলগত বিভিন্ন ঘটনা আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়েছে। এই সঙ্কটের সময় আমাদের সহযোগিতা আরও গভীর করা প্রয়োজন।”
মোদী-কিশিদা কথা। —ফাইল চিত্র।
একদিকে দু’দেশের মধ্যে আর্থিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করা। অন্য দিকে অস্থির ভূকৌশলগত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নিজেদের নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই দুই লক্ষ্যে আজ নয়াদিল্লিতে চতুর্দশ বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দাবি, আলোচনা সফল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, আগামী পাঁচ বছরে পাঁচ ট্রিলিয়ন ইয়েন অর্থাৎ ৩ লক্ষ কুড়ি হাজার কোটি টাকার জাপানি বিনিয়োগ পাবে ভারত। বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। জাপানি বিনিয়োগের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা, নগরোন্নয়ন সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি সই করেছে ভারত এবং জাপান। বৈঠকে কথা হয়েছে কার্বন নিঃসরণ কমানো নিয়েও।
বৈঠকের পরে মোদী বলেন, “এখনও গোটা বিশ্ব কোভিডের সঙ্গে যুঝছে। তার উপর ভূকৌশলগত বিভিন্ন ঘটনা আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়েছে। এই সঙ্কটের সময় আমাদের সহযোগিতা আরও গভীর করা প্রয়োজন।” ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির জন্যও ভারত-জাপান ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মোদী। সেই প্রসঙ্গে উঠেছে চিনের কথাও। মোদী বিস্তারিত ভাবে লাদাখে চিনের অনুপ্রবেশের কথা জানিয়েছেন কিশিদাকে। এ কথাও মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সীমান্তে শান্তি না ফিরলে ভারত-চিন সম্পর্ক আগের মতো থাকবে না। অন্য দিকে জাপানও দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আজকের আলোচনায় উঠে এসেছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এশিয়ার সার্বিক অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা। রাতে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘‘দু’পক্ষই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। দু’দেশই একমত, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা প্রয়োজন। অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করে আলোচনা এবং কূটনীতির রাস্তায় ফেরা দরকার। দু’দেশই ইউক্রেনবাসীদের জন্য সহায়তা পাঠাচ্ছে।’’
শনিবারই ভারতে পৌঁছন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে এটিই তাঁর প্রথম সফর। রবিবার সকালেই দিল্লি ছাড়বেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, আগামী দিনে জাপানের বিনিয়োগ দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী প্রকল্পের কাজে লাগানো হবে। দেশের উত্তর-পূর্বের উন্নয়নেও এই অর্থ কাজে লাগানো হবে। পাশাপাশি, চতুর্দশ ইন্দো-জাপান বার্ষিক বৈঠকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে উন্নয়ন করতে চায় জাপান। কিশিদার এই সফর তারই সূচনা।
বর্তমানে ভারতে ১৪৫৫টি জাপানি সংস্থার বিনিয়োগ রয়েছে। দেশের ১১টি শহরে রয়েছে উল্লেখযোগ্য জাপানি সহায়তা। ভারতে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে জাপান রয়েছে পাঁচ নম্বরে।