MS Golwalkar

রাজীব গাঁধীর নাম পাল্টে গোলওয়ালকরের নামে বিজ্ঞান কেন্দ্রের নামকরণ, বিতর্কে মোদী সরকার

প্রশ্ন উঠছে, বিজ্ঞান চর্চায় গোলওয়ালকরের কী অবদান, যার জন্য তাঁর নামে আরজিসিবি-র এই নতুন নামকরণ হচ্ছে?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:০৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

নাম বদলের তালিকায় এ বার তিরুঅনন্তপুরমের রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি (আরজিসিবি)। আরজিসিবি-র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটির নাম পাল্টে সঙ্ঘ ‘গুরুজি’ গোলওয়ালকরের নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার জেরে সমালোচনার মুখে তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে কেরল সরকার। কংগ্রেসের তরফেও তীব্র আপত্তি জানানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বিজ্ঞান চর্চায় গোলওয়ালকরের কী অবদান, যার জন্য তাঁর নামে আরজিসিবি-র এই নতুন নামকরণ হচ্ছে?

Advertisement

আরজিসিবি-র নাম পাল্টানোর বিষয়টি শুক্রবার সামনে আনেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষবর্ধন। ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে বক্তৃতা করার সময় জানান, আরজিসিবি-র নাম পাল্টে ‘শ্রী গুরুজি মহাদেব সদাশিব গোলওয়ালকর ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লেক্স ডিজিস ইন ক্যানসার অ্যান্ড ভাইরাল ইনফেকশন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

তাঁর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তা নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। লেখেন, ‘শুরুতে রাজ্য সরকারই আরজিসিবি চালাত। প্রতিষ্ঠানটিকে যাতে আন্তর্জাতিক গুণমানের গবেষণাগার হিসেবে তুলে ধরা যায়, তার জন্য পরবর্তী কালে সেটি কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাই কেরল সরকার চায়, প্রস্তাবিত নামের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কোনও ভারতীয় বিজ্ঞানীর নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হোক’।

Advertisement

আরও পড়ুন: বারাণসীতে মোদীর গড়ে ধাক্কা বিজেপির, বিধান পরিষদের ২ আসনেই এসপি-র জয়​

সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে পিনারাই লেখেন, ‘সিদ্ধান্ত যদি নেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে অথবা যদি আলাপ আলোচনার পর্যায়েও থাকে, তাহলেও এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখতে অনুরোধ করছি। আশাকরি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক কোনও ভারতীয় বিজ্ঞানীর নামে নতুন ক্যাম্পাসের নামকরণের বিষয়টি ভেবে দেখবেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং তা নিয়ে কোনও রকম বিতর্কও মাথাচাড়া দেবে না’।

কেরল সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক তথা লেফ্‌ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের আহ্বায়ক সদস্য এ বিজয়রাঘবন বলেন, ‘‘বিজেপির কাজই এটা। সর্বদা সাম্প্রদায়িক প্রতীক তুলে ধরার প্রচেষ্টা করে ওরা। পুরসভা নির্বাচনের সময় হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছিল। ইলাহাবাদের নাম ইতিমধ্যেই পাল্টে ফেলেছে। এ বার অন্য শহরগুলিতে নজর পড়েছে। বিজ্ঞানচর্চার কেন্দ্রকে এখন সঙ্ঘপরিবারের নাম দিতে চাইছে ওরা। সব কিছুতে সাম্প্রদায়িকতা টেনে আনা, মানুষের মনে সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা ঢুকিয়ে দেওয়াই ওদের লক্ষ্য।’’

কেরল বিধানসভার বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নিথালা বলেন, ‘‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করছি। নাম পাল্টানোর আগে কেরলবাসীকে কৈফিয়ত দিতে হবে মোদী সরকারকে। গোলওয়ালকরের অবদান সম্পর্কে সকলকে অবহিত করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: টিকা নেবেন রানি, কিন্তু থাকতে হবে অপেক্ষায়​

টুইটারে এ নিয়ে সরব হন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও। তিনি লেখেন, ‘সাম্প্রদায়িকতরা রোগ ছড়ানো ছাড়া বিজ্ঞানচর্চায় গোলওয়ালকরের কী অবদান? রাজীব গাঁধীর কথা উঠলে বলব, বিজ্ঞান সংক্রান্ত উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন তিনি, তার জন্য অনুদান জোগাড় করেছিলেন। অন্তত চেষ্টা করেছেন এমন কেউ কি নেই বিজেপি-তে ? এক জন ধর্মান্ধ হিটলার-প্রেমী, ১৯৬৬ সালে যিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অনুষ্ঠানের ভাষণে ধর্মকে বিজ্ঞানের চেয়ে ঊর্ধ্বে রেখেছিলেন, তাকে অমরত্ব দেওয়া কি কেন্দ্রের জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ’? কেরলের প্রখ্যাত ব্যাকটেরিয়া বিশেষজ্ঞ এবং সমাজকর্মী পি পাপ্পুর নামে আরজিসিবি-র দ্বিতীয় ভবনটির নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন তারুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement