জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নে মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন জম্মু-কাশ্মীর। নিয়মিত তোপ দেগে চলেছেন বিরোধীরা। সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। উপত্যকার অভ্যন্তরেও বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের খবর আসছে। এই সব কিছুরই জবাব উন্নয়ন অস্ত্রেই দিতে চায় বিজেপি। সেই উদ্দেশেই জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নে গঠিত হল মন্ত্রিগোষ্ঠী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে পরিকাঠামো— সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নয়নের রোড ম্যাপ কী হতে পারে, তার নীল নকশা তৈরির ভার পড়েছে পাঁচ সদস্যের এই মন্ত্রিগোষ্ঠীর উপর। আগামী ৩১ অক্টোবর রিপোর্ট দেওয়ার কথা এই কমিটির।
পাঁচ জনের দলে রয়েছেন আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ইস্পাত মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীন উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংহ, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও ন্যায়বিচার মন্ত্রী থবরচাঁদ গহলৌত। কাশ্মীরের উন্নয়নে কোথায় খামতি রয়েছে, কোন কোন খাতে উন্নয়নের প্রয়োজন এবং কী ভাবে তা সম্ভব, সে সব খতিয়ে দেখে বিস্তারিত একটি প্রস্তাব তৈরি করতে বলা হয়েছে এই মন্ত্রিগোষ্ঠীকে। তা ছাড়া বরাদ্দ টাকা কোন খাতে কী ভাবে খরচ করা যায়,তার ব্লু প্রিন্টও তৈরি করতে হবে এই কমিটিকে। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পর তা খতিয়ে দেখে উন্নয়নের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
কেন্দ্রের একটি সূত্রে খবর, দায়িত্ব পেয়েই নিজেদের কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছেন পাঁচ মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই দু’বার তাঁরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন বলেও সূত্রের খবর। তা ছাড়া প্রত্যেকে আলাদা করেও কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখেও চলছে পরিকল্পনা তৈরির কাজ। কেন্দ্রের অন্য একটি সূত্রে খবর, বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে যুব-সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থান এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির উপর।
আরও পড়ুন: আমরা জানি কী করতে হবে, ৩৭০ বিলোপ নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের, মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে
আরও পড়ুন: উর্দি পরে মমতাকে পা ছুঁয়ে প্রণাম, বিতর্কে আইজি রাজীব মিশ্র
গত ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে জম্মু-কাশ্মীর এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। লাদাখকেও তৈরি করা হয়েছে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ফলে গোটা উপত্যকার উন্নয়ন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা-সহ যাবতীয় প্রশাসনিক বিষয়ের দায়িত্ব কেন্দ্রের। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় একাধিক মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। জম্মু-কাশ্মীরের একটা বড় অংশের মানুষও যে ৩৭০ ধারা রদের বিপক্ষে, বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ-অশান্তিতে তার আঁচ মিলছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষদের ব্যাখ্যা,উপত্যকার মানুষের আস্থা অর্জন করতে উন্নয়নই হতে পারে অন্যতম হাতিয়ার। সেই লক্ষ্যেই মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি এবং ঢালাও বরাদ্দ করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে কেন্দ্র।