বিহার ভোটে মোদি-অমিত জুটির তুরুপের তাস জেপি-ও

বিহার ভোটের ঠিক এক দিন আগে জয়প্রকাশ নারায়ণকে আসরে নামাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি!

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ১৮:৫৬
Share:

ব্রিগেডের সভায় জয়প্রকাশ নারায়ণ। —ফাইল চিত্র।

বিহার ভোটের ঠিক এক দিন আগে জয়প্রকাশ নারায়ণকে আসরে নামাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি!

Advertisement

লক্ষ্য, জয়প্রকাশকে (জেপি) সামনে রেখে ভোটের ঠিক এক দিন আগে বিহারের বিরোধী জোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা। যে ভাবে লালু-নীতীশ কংগ্রেসের সঙ্গে হাত ধরে বিজেপি বধে নেমেছেন, এ বারে ঘটা করে জেপি-র জন্মদিবস পালন করে বিজেপি প্রচার করবে, কী ভাবে এই কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন চালিয়েছিলেন জেপি। আর সেই কংগ্রেসের সঙ্গেই এখন জোট বেধেছেন লালু-নীতীশ। জেপি-কে তাঁরা ভুলে গিয়েছেন। অপমান করছেন।

ভোটের সময় জেপি-কে এই নিয়ে মহাড়ম্বর যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটায়, তারজন্য আগেভাগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে দিয়ে তাঁর জন্মদিবস পালনের ঘোষণা করে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এ বারে এই প্রথম যে আয়োজন করা হচ্ছে, সেটি রীতিমতো বেনজির। বিহারের প্রথম দফায় ভোট শুরু হচ্ছে ১২ অক্টোবর। তার এক দিন আগেই জেপি-র জন্মবাষির্কী। আর সেই দিনই মূল অনুষ্ঠানটি হচ্ছে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে। সেই দিন গণতন্ত্র রক্ষা দিবস হিসেবেও ঘোষণা হবে। আর দিল্লির মূল অনুষ্ঠানটিতে হাজির থাকতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন প্রচারে মোদী অনেক বারই বলেছেন, লালু-নীতীশ জেপি-কে ভুলে এখন কংগ্রেসের হাত ধরেছেন। এ বারে জেপি-র জন্মবার্ষিকী ঘটা করে পালন করে সেই প্রচারটিই ভোটের ঠিক মুখে আরও তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

কিন্তু নিয়মমাফিক শুধু রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানেই এটিকে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে না। গোটা দেশেই এটিকে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে বিহারেও এই প্রচার অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারে। আবার গোটা দেশে করার অছিলায় শুধুমাত্র বিহারের জন্য করা হচ্ছে, এই অভিযোগ নিয়ে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগও কেউ আনতে পারবে না। অমিত শাহ বিজেপি শাসিত সব মুখ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে জেপি-র জন্মতিথি ঘটা করে পালন করতে। এবং সেটিকে পৌঁছে দিতে হবে জেলাস্তর পর্যন্ত। দলের সব সাংসদকেও চিঠি লেখা হয়েছে এই অনুষ্ঠানে সামিল থাকার জন্য। বিভিন্ন জায়গায় প্রদশর্নীর আয়োজন করা হবে। সেখানে বলা হবে, কী করে গণতন্ত্র রক্ষায় জেপি আন্দোলন করেছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আর সেই কংগ্রেসের সঙ্গেই এখন জোট বেঁধেছেন লালু-নীতীশ।

শুধু তাই নয়, জরুরি অবস্থার সময় মিসায় বন্দিদেরও সম্মান জানানো হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের মতে, ‘‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সব থেকে বড় আন্দোলন যিনি করেছিলেন, তাঁর নাম জয়প্রকাশ নারায়ণই। দেশের গণতন্ত্র তিনিই পুনর্স্থাপনা করেছিলেন।’’ বিহারে জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মভিটে ছাপড়া জেলায় সিতাবদিয়ারায় একটি জাতীয় স্মারকও তৈরি করা হবে। কেন্দ্র একটি লোকনায়ক খাদি সম্বর্ধন কেন্দ্রও গড়বে সেখানে। আশপাশের গ্রামের মহিলাদের দিয়ে জাতীয় পতাকা তৈরি করানো হবে। সব মিলিয়ে বিহারে ভোটে কোনও তাসই অধরা রাখতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement