আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।
দেশ জুড়ে গণপ্রহারে হত্যার বাড়বাড়ন্তে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নাগরিক সমাজ— উদ্বিগ্ন অনেকেই। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের উদ্বেগ কিন্তু ভিন্ন। তাঁর দাবি, ‘লিঞ্চিং’ (গণপ্রহারে হত্যা) ব্যাপারটাই পশ্চিমি। ভারতের ঘটনাপ্রবাহকে ‘লিঞ্চিং’ বলে উল্লেখ করলে দেশের এবং হিন্দু সমাজের ‘অবমাননা’ করা হয়!
গত কয়েক বছরে দেশের নানা প্রান্তে কখনও গরু, কখনও জাত-ধর্ম, কখনও রামনাম, কখনও গুজবকে ছুতো করে গণধোলাই এবং হত্যার ঘটনা ক্রমশ বেড়েছে। গোরক্ষার নামে তাণ্ডব রুখতে প্রতিটি রাজ্যকে সক্রিয় হতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। একাধিক রাজ্য লিঞ্চিং রোধে আলাদা আইনও তৈরি করেছে। এই অবস্থায় আজ ‘লিঞ্চিং’কে ভারতের ‘অচেনা’ বলে দাবি করে ভাগবত বাস্তবতাকেই অস্বীকার করলেন কি না, প্রশ্ন উঠছে। মঙ্গলবার বিজয়াদশমী উপলক্ষে নাগপুরে ভাগবত বলেন, ‘‘লিঞ্চিং শব্দটি এখন হিন্দুদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়, এটা কোনও ভারতীয় শব্দই নয়।’’ এক মহিলাকে পাথর ছুড়ে মারতে উদ্যত জনতা এবং যিশুর বাণীর কথা উল্লেখ করে ভাগবতের দাবি, বাইবেলের ওই ঘটনাটি ‘লিঞ্চিং’। ভারতে যা ঘটে চলেছে, সেগুলো ‘সামাজিক হিংসা’। ভাগবতের কথায়, ‘‘সামাজিক হিংসার কোনও ঘটনাকে লিঞ্চিং বলা মানে আমাদের দেশ, হিন্দু সমাজকে কলঙ্কিত করা এবং অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা।’’ এ দিন ভাগবত ভারতকে ফের হিন্দু-রাষ্ট্র বলেও দাবি করেন।
কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা পরে বলেন, ‘‘ওঁর কথা শুনে স্তম্ভিত। বিষয়টা তো ভারত-ইউরোপ, ইংরেজি-হিন্দির নয়।’’ শশী তারুরের পরামর্শ, ‘‘লিঞ্চিংয়ের ভারতীয় সংস্কৃতিমান্য পরিভাষা দিন তা হলে!’’ এমআইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির কটাক্ষ, ‘‘ভাগবত লিঞ্চিং বন্ধ করতে বলেননি, উনি শুধু তাকে ওই নামে ডাকতে বারণ করেছেন।’’