জামিনে মুক্তকে ‘ধর্ষক’ ঠাউরে গণপিটুনি

প্রশ্নটা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে হায়দরাবাদের ঘটনা। পালাক্কড়ের একটি ঘটনা আজ উস্কে দিল আর একটি গুরুতর প্রশ্ন। সেখানে জামিনে মুক্ত ধর্ষণ মামলার এক অভিযুক্তকে পাড়ার লোকজন ধর্ষক বলে চিহ্নিত করে বেধড়ক মারধর করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা  

পালাক্কড় শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩২
Share:

মারধরের পরে পড়ে আছে মধু। শনিবার কেরলের পালাক্কড়ে।

কতটা ধৈর্য রাখলে পরে বিচার পাওয়া যায়!

Advertisement

প্রশ্নটা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে হায়দরাবাদের ঘটনা। পালাক্কড়ের একটি ঘটনা আজ উস্কে দিল আর একটি গুরুতর প্রশ্ন। সেখানে জামিনে মুক্ত ধর্ষণ মামলার এক অভিযুক্তকে পাড়ার লোকজন ধর্ষক বলে চিহ্নিত করে বেধড়ক মারধর করেছে। এ দিনই মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে আদালত চত্বরে অঙ্কিত নামে এক বিচারাধীনের উপরে হামলে পড়েন আইনজীবীরা। মারধর করেন পুলিশের সামনেই। অঙ্কিত ৪ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণে অভিযুক্ত।

বিচারে বিলম্ব ও শাস্তি কার্যকর না-হওয়া নিয়ে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু হায়দরাবাদে পুলিশের ‘চটজলদি বিচার’-এর পরে উদ্বেগ বাড়িয়েছে পালাক্কড়ে জনতার ও ইনদওরে আইনজীবীদের ‘বিচার ও শাস্তিদান’। অভিযোগ, পালাক্কড়ে আরএসএসের লোকজন মারধর করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আইনের শাসন দিতে ব্যর্থ শাসক শিবিরের লোকজনই কি ‘জনতার বিচারে’ ইন্ধন দিচ্ছে?

Advertisement

তামিলনাড়ুর সীমানা ঘেঁষা কেরলের ওয়ালায়ারে ছোট এক গ্রাম। সেখানে ১৩ ও ৯ বছরের দুই দলিত বোনকে ধর্ষণ করে তাদের ঘরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৫২ দিনের ব্যবধানে। ২০১৭-র গোড়ার দিকে ঘটনা। পুলিশ চার জনকে ধরলেও পকসো আদালত গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক জনকে ও ২৫ অক্টোবর বাকি তিন জনকে বেকসুর ঘোষণা করে। যথেষ্ট প্রমাণ পেশ না-করার জন্য পুলিশকে ভর্ৎসনাও করে আদালত।

শিশু দু’টির মা আর আম জনতার তীব্র প্রতিবাদে রাজ্য সরকার পকসো আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছে গত ২০ নভেম্বর। সেই মামলায় অভিযুক্তদের এক জন, এম মধু জামিন পেয়ে সম্প্রতি কোয়ম্বত্তূর থেকে নিজের বাড়িতে ফেরে। আজ স্থানীয়দের সঙ্গে বচসা বাধে তার। পাড়ার লোকজন মধুকে ধর্ষক বললে, সে-ও পাল্টা গালাগাল শুরু করে। এতে মধুকে ধরে বেধড়ক পেটায় গ্রামবাসীরা। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাকে। মধুর মায়ের দাবি, পিটিয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের লোকজন। পালাক্কড়ের পুলিশ-প্রধান জানাচ্ছেন, চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে তিন জন।

হায়দরাবাদে আট দিনের মাথায় অভিযুক্তরা নিহত! এই খবরে গত কাল থেকে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছে দেশ। চলছে মিষ্টি বিলি, বাজি ফাটানো। পুলিসের ‘এনকাউন্টার’-এ উচ্ছ্বসিতরা বলছেন, নির্ভয়া কাণ্ডের জেরে নয়া আইন হলেও ধর্ষক-খুনিদের শাস্তি কার্যকর হয়নি আজও। এটা তাই দরকার ছিল। ধর্ষকদের জন্য এটাই ঠিক বার্তা। সংখ্যায় কম হলেও কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য, হাতেনাতে বিচার বলে কিছু হয় না। তবু পালাক্কড়-ইনদওর আজ কোন বার্তা দিল, প্রশ্ন সেটাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement