ব্যবসায়ী খুনের অভিযোগে আঙুল উঠল আরজেডি বিধায়ক তথা রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। গত কাল দ্বারভাঙার সদর থানার শাহপুর-চক্কা গ্রামের বাসিন্দা, নির্মাণ-ব্যবসায়ী হীরা পাশোয়ানের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। নিজের বাড়ির বাগানে দেহটি পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যরা থানায় খবর দেন। পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
আজ পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন: আরজেডি বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ললিত যাদবের নির্দেশেই খুন করা হয়েছে হীরা পাশোয়ানকে। পুলিশ এফআইআরে বিধায়কের নাম দিতে চায়নি বলেও অভিযোগ করেছে পাশোয়ানের পরিবার। সরকারের তরফে ললিত যাদবকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
দ্বারভাঙার এসএসপি সত্যবীর সিংহ বলেন, ‘‘জমি নিয়ে গোলমালের জেরেই এই খুন বলে মনে হচ্ছে।’’ বিধায়কের নামে অভিযোগ ওঠায় তিনি বলেন, ‘‘এফআইআরে বিধায়কের নাম নেই। তবে পরিবারের সদস্যরা যে অভিযোগ করেছেন তার তদন্ত হবে।’’ পাশাপাশি, বিধায়ক ললিত যাদব অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। ফোন করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সচিব বলেন, ‘‘যাদবজি বাইরে আছেন।’’ একই সঙ্গে খুনে ‘যাদবজি’-র জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
এর আগে রাবড়ীদেবীর সরকারে সমবায় মন্ত্রী ছিলেন ললিত যাদব। মারপিট ও গোলমালের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মন্ত্রী থাকার সময়, ২০০০ সালে নিজের সরকারি বাসভবনে এক ট্রাকচালক ও খালাসিকে এক মাস ধরে আটকে রেখেছিলেন তিনি।
গোটা বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে সরিয়ে দেন লালুপ্রসাদ। পরে আরজেডির প্রাথমিক সদস্যপদও কেড়ে নেওয়া হয়। কিন্তু লালুপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ অনুগামী এ বারে ফের আরজেডির টিকিটে বিধায়ক হয়েছেন।
বিধায়কের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠায় আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা নন্দকিশোর যাদব বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে প্রায় সমস্ত অপরাধের ঘটনায় শাসক দলের বিধায়কদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে।’’ এতে অবশ্য অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বিজেপি নেতা।
তাঁর মতে, ‘‘এই সরকারের আমলে এটাই তো স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।’’ ললিত যাদবকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ খারিজ করেছেন জেডিইউ নেতা শ্যাম রজক। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সরকার কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না। কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টাও করছে না আমাদের সরকার।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।’’