অস্ত্রোপচার করছেন থিয়ামসাংগা। নিজস্ব চিত্র
নেতিয়ে পড়ছিলেন ৩৮ বছরের সি লালমানগাইসাংগি। প্রসব বেদনা তো ছিলই। সেই সঙ্গে চলছিল রক্তপাত। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন বাড়ির লোকেরা। কিন্তু রাখে থিয়াম তো মারে কে!
দ্বিতীয় বারের প্রসবের সময় প্রবল রক্তপাতের জেরে মায়ানমার সীমান্তের মিজোরামের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা লালের অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছিল। এ দিকে, জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অসুস্থ হয়ে ছুটিতে। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, আইজল নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু ওই অবস্থায় গর্ভবতী মাকে ১৯৪ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া সম্ভবই ছিল না। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসেন উত্তর চাম্ফাইয়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জেড আর থিয়ামসাংগা। হাতে গলিয়ে নেন গ্লাভস। তুলে নেন ছুরি-কাঁচি। দক্ষ হাতের অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল মায়ের। পৃথিবীর আলো দেখল শিশুও।
থিয়াম বলেন, “রাজনীতি করতে এসেছি মানুষের ভাল করার জন্যে। কিন্তু শপথ নিয়ে ডাক্তারি পড়া শুরু করেছিলাম। তাই আমার প্রথম কাজ মানুষের জীবন রক্ষা করা।” গত কাল চাম্ফাইয়ের গ্রামে গ্রামে কোভিড আক্রান্তদের ও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের খবর নিচ্ছিলেন থিয়াম। ওই প্রসূতির বিপদের কথা জানতে পারেন তখনই।
গত জুন মাসেই থিয়াম খবর পেয়েছিলেন মায়ানমার সীমান্তে প্রহরারত এক জওয়ান অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে হাসপাতালে আনার মতো রাস্তা নেই। তাই সব ওষুধপত্র, সরঞ্জাম নিয়ে ৭ কিলোমিটার পাহাড়-জঙ্গল ভেঙে, কোমরজলের পাহাড়ি নদী পার করে থিয়াম সীমান্তে পৌঁছে যান। চিকিৎসা করেন ওই জওয়ানের। অনেক সময় রাস্তায় অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখলেও গাড়ি থেকে নেমে চিকিৎসা করেছেন থিয়াম।