রাতের মিজোরাম।—ফাইল চিত্র
সুখের সংজ্ঞা কী! ভাবছেন দেশের অন্যতম সুখী রাজ্যের মানুষ।
গত এক বছরে রাজ্যে অসন্তোষের কারণ কম নয়। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাস্তায় নেমে প্রকাশ্যে ‘হ্যালো চায়না, বাই বাই ইন্ডিয়া’ স্লোগান-পোস্টার উঁচিয়ে মিছিল করেছেন মিজোরা। নতুন সরকার এসে মদ্যপান ও বিক্রি নিষিদ্ধ করায় বেজায় দুঃখে সুরাপ্রেমীরা। পরিবর্তে তাঁরা বেছে নিয়েছেন মাদক। প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রাজ্যে ২১,৫৩৮ জন এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এডস রোগীর সংখ্যায় মিজোরাম দেশে শীর্ষস্থানে। মাঝেমধ্যেই ভূকম্প হচ্ছে মিজোরামের বিভিন্ন জেলায়। বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন মানুষ। নামছে ধস। ব্রু শরণার্থীদের নিয়ে বিবাদ-বিতর্ক চলছে বিস্তর। বৈষম্যের অভিযোগ তুলছেন চাকমারা। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে রাজ্যের দেড় হাজারের বেশি মানুষ। অবশ্য উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারতের একমাত্র রাজ্য মিজোরাম যেখানে আজ পর্যন্ত করোনা কারও প্রাণ কাড়তে পারেনি। এত দুঃখের পরে হয়ত তার দৌলতেই ভারতে প্রথম বার হওয়া সুখী রাজ্যের সমীক্ষায় ছোট রাজ্যগুলির তালিকায় শীর্ষস্থান পেল মিজোরাম।
সেই সঙ্গে প্রতিবেশী চিনের শাসানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, সুখী রাজ্যের প্রথম তিনে স্থান করে নিয়েছে অরুণাচলপ্রদেশও।
এ দিকে সুখী রাজ্যের তালিকায় একেবারে শেষে স্থান ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানার। পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ২০ নম্বরে। দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে সুখের উপরে কোভিডের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি।
এই প্রথম বার দেশে সুখের সমীক্ষা চালানো হল। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নেওয়া হয়েছিল সমীক্ষার আওতায়। সুখের উপরে কোভিডের প্রভাব, জনতার উপরে নেতাদের প্রভাব আর আম জনতার সুখের চাবিকাঠি— এ সবই সমীক্ষায় যাচাই করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেখা গিয়েছে ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম তিনে রয়েছে মিজোরাম ছাড়াও সিকিম ও অরুণাচল। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম তিনে রয়েছে পঞ্জাব, গুজরাত, তেলেঙ্গানা। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে আন্দামান ও নিকোবর।
২০২০ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত পুরোপুরি লকডাউন পর্বে সমীক্ষাটি চালানো হয়। ফলাফল সম্পাদনা করেছেন অধ্যাপক রাজেশ কে পিল্লনিয়া।
সমীক্ষার ফলে সুখের শর্ত হিসেবে উঠে এসেছে বৈবাহিক অবস্থা, বয়স, শিক্ষা ও রোজগার। সমীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা গিয়েছে, বিবাহিতরাই অবিবাহিতদের তুলনায় বেশি সুখী! দেশের মধ্যে কোভিডের সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও হরিয়ানার উপরে।