Strike

ধর্মঘটে মিশ্র সাড়া দেশ জুড়ে

এনআরসি নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের মধ্যে ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে অসমে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৩
Share:

অমৃতসরে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।

দেশে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা কার্যত বিপর্যস্ত। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ১৫ লক্ষ কর্মী কাজে যোগ দেননি। কেরল, অসম, ওড়িশায় একেবারে বন্‌ধের ছবি। তবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক নীতির প্রতিবাদে দশটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট ছাপ ফেলতে পারল না দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো মহানগরে। রাজস্থান, পঞ্জাব, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরায় মিশ্র সাড়া। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানার জনজীবনে প্রভাব পড়েনি ধর্মঘটের। শ্রমিক সংগঠনগুলির অবশ্য দাবি, ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন ২৫ কোটি মানুষ।

Advertisement

এনআরসি নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের মধ্যে ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে অসমে। দোকানবাজার খোলেনি, বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যানবাহন প্রায় ছিলই না। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। কাজ হয়েছে বঙ্গাইগাঁও, ডিগবয়ের তেল শোধনাগারে।

ওড়িশাতেও জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন ও বাস পরিষেবার উপর প্রভাব পড়েছে ধর্মঘটের। শ্রমিক সংগঠনগুলির সদস্যেরা বিভিন্ন এলাকায় রেল অবরোধ করেন। অধিকাংশ দোকানপাট, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলেনি।

Advertisement

কেরলে শাসক বাম এবং বিরোধী কংগ্রেস ধর্মঘটকে সমর্থন করায় রাজ্যে সর্বাত্মক বন্‌ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যানবাহন, অফিস, স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল সবই। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যেরা দফতরে যাননি। সরকারি দফতরও ছিল ফাঁকা।

ত্রিপুরায় ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিকই ছিল। অধিকাংশ এলাকাতে দোকানপাট খোলা, সরকারি দফতরে কাজকর্ম স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। ধর্মঘটের ডাক ঝাড়খণ্ডের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে রাষ্ট্রীয় কোলিয়ারি মজদুর সঙ্ঘের নেতা এ কে ঝা-র দাবি, খনি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ধর্মঘটের। ভারত কুকিং কোল লিমিটেডের চেয়ারম্যান পি এম প্রসাদ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।

তামিলনাড়ুতে শক্তি দেখাতে চেয়েছেন ধর্মঘটীরা। কোয়েম্বাত্তূরের ১৫ হাজার অটো চালক রাস্তায় নামেননি। সেখানে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে সিপিআই ও সিপিএমের দু’জন সাংসদ ও আটশো ধর্মঘটীকে গ্রেফতার করা হয়। কংগ্রেস ও বাম কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশেও। বরফপাত ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হিমাচল প্রদেশের শিমলা ও অন্য অনেক শহরে আজ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ধর্মঘটীরা।

ব্যাঙ্কগুলিতে ধর্মঘটের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ, বেসকারিকরণ, পরিষেবার মূল্য বাড়ানোর বিরোধিতা এবং বেতন সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবিতে কর্মী সংগঠনগুলি ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে। ফলে দেশে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা আজ কার্যত স্তব্ধ বয়ে গিয়েছিল। অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র দুবে দাবি করেছেন, দেশে ১৫ লক্ষ বিদ্যুৎ কর্মী ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন।

দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে ধর্মঘটের তেমন প্রভাব পড়েনি। রাজধানীতে মেট্রো রেল ও সরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিল্লিগামী ট্রেন চলাচলে ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে পারে বলে রেলকর্তারা জানিয়েছেন। দিল্লির মায়াপুরী এবং ওয়াজ়িরাবাদ শিল্পাঞ্চলে বিক্ষোভ দেখান ধর্মঘটীরা। বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি। দোকানপাট খোলা, রেল ও সড়ক পথে যাতাযাত স্বাভাবিকই ছিল। তবে পুণের আশপাশে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ ছিল আজ। ঘটনা হল, মহারাষ্ট্রে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার উপরে ধর্মঘটের বিশেষ প্রভাব পড়েনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement