—ফাইল চিত্র।
তাঁকে ‘রাজনৈতিক ভাবে হত্যার’ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন নীতীশ কুমার। গত কাল সন্ধ্যায় জেডিইউ বিধায়কদের সঙ্গে এক বৈঠকে নীতীশ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে আমার সমর্থনকে রাজনৈতিক সমীকরণ বদল হিসেবে দেখা ঠিক নয়। যাঁরা সেই চেষ্টাটা করছেন তাঁরা আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হত্যার চেষ্টা করছেন।’’ একই ভাবে নীতীশ আজ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে লালুপ্রসাদের বাড়িতে গিয়ে আরজেডি বিধায়কদের কাছেও নিজের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেছেন। বুঝিয়েছেন, কেন কেন্দ্রের নোট বদলের এই সিদ্ধান্তের পাশে তাঁদের থাকা উচিত।
দু’টি বৈঠকেই নীতীশ দলীয় নেতাদের বলেছেন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে তিনি কোনও বৈঠকই করেননি। তা সত্ত্বেও ‘বিরোধীরা’ সংবাদ মাধ্যমে এমন একটা খবর ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। আরজেডি পরিষদীয় দলের বৈঠকে অবশ্য নীতীশ ‘রাজনৈতিক হত্যার ষড়যন্ত্র’ প্রসঙ্গ নিজে থেকে উত্থাপন করেননি। তবে কয়েকজন আরজেডি বিধায়ক এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। নীতীশ তাঁর জবাবে বলেন, ‘‘আপনারা নজর রাখুন। বুঝতেই পারবেন কারা এই চেষ্টা করছে। জোট সরকারের স্বার্থেই আমাদের সকলকে সাবধানে চলতে হবে।’’ বৈঠক শেষে অসুস্থ লালুর শারীরিক কুশল সম্পর্কে
খোঁজখবর করে লালু-রাবড়ীর সঙ্গে খানিকটা গল্প করে নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী আবাসে ফিরে যান।
তবে এই বৈঠকের আগে নীতীশের যড়যন্ত্র-তত্ত্ব প্রকাশ্যে আসতেই আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক ভাই বীরেন্দ্র সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘আমরা নীতীশ কুমারকে রাজনৈতিক জীবন দান করেছি। আমরাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেছি।’’ বৈঠকেও আরজেডি বিধায়করা নীতীশকে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, নোট বাতিলের প্রশ্নে নীতীশের মনোভাবে ক’দিন আগেই সরব হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অশোক চৌধুরী। জোট ভেঙে, সরকার ছেড়ে যাওয়ার হুমকিও তিনি দেন। আজ নীতীশকে ঠাণ্ডা করতে এগিয়ে এসেছেন কংগ্রেসেরই গুরুত্বপূর্ণ বিধায়ক সদানন্দ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি প্রথম থেকেই মহাজোট ভাঙার চেষ্টা করছে। তবে তাতে কোনও লাভ হবে না।’’
তবে বিজেপিও যে এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় তা তাদের নেতাদের মন্তব্যেই স্পষ্ট। তাঁদের বক্তব্য, প্রথম থেকেই নীতীশ কুমারের হাতে সমস্ত সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া উচিত। একই দাবি বিজেপি সহযোগী লোক জনশক্তি পার্টির নেতা রামবিলাস পাশোয়ানের। বিজেপি নেতা নন্দকিশোর যাদব বলেন, ‘‘নীতীশ কুমার ভাল ভাবেই জানেন বিজেপি নয়, তাঁর নিজের লোকদের কাছ থেকেই বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’ তবে জেডিইউ অবশ্য গোটা ঘটনার দায় আপাতত সেই সংবাদ মাধ্যমের ঘাড়েই চাপাতে চাইছে। দলের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম রজক বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমই গুজব ছড়াচ্ছে।’’