বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত এক তরুণের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে ২৪ পাতার সুইসাইড নোটও। — প্রতীকী চিত্র।
পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা-সহ একের পর এক অভিযোগ ওঠে বেঙ্গালুরুর এক তরুণের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মামলার রায়ও গিয়েছে তাঁর বিপক্ষে। সেই চাপের মুখে পড়েই কি আত্মঘাতী হলেন তিনি? ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া ২৪ পাতার সুইসাইড নোট সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। সেখানে লেখা, “বিচার এখনও বাকি।” এর পর থেকেই পারিবারিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃত তরুণের পরিবারের সদস্যেরা প্রশ্ন তুলেছেন। সমাজমাধ্যমেও চর্চা শুরু হয়েছে। এই আবহে পারিবারিক আদালত নিয়ে মুখ খুলল কেন্দ্রও। মঙ্গলবার রাতে আইন ও বিচার মন্ত্রকের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করা হয়েছে পারিবারিক আদালতের বিষয়ে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, বিবাহ, সম্পত্তির উত্তারাধিকার, সন্তান কার সঙ্গে থাকবে— এ সব মামলাগুলি দেখে পারিবারিক আদালত। যথেষ্ট যত্ন নিয়ে, সংবেদনশীলতার সঙ্গে এবং প্রয়োজনে প্রথাগত রীতির বাইরে গিয়েও মামলাগুলি বিবেচনা করে পারিবারিক আদালত। সময়ের মধ্যে পক্ষপাতহীন সমাধান খুঁজে বার করে পারিবারিক আদালত। শুধু তা-ই নয়, সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টাও করে।
অতুল সুভাষ নামে ওই তরুণের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগ, ওই তরুণের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র নিষ্পত্তির জন্য তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেরা তিন কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। পুলিশের এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই এ কথা জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে সুইসাইড নোটটি উদ্ধার হয়েছে, তাতেও স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন অতুল। সুইসাইড নোটে অভিযোগ তোলা হয়েছে স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের দিকে। মৃত তরুণের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।
মৃত তরুণ আসলে উত্তরপ্রদেশেরে বাসিন্দা। বেঙ্গালুরুতে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। চাকরি সূত্রেই থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে দাবি করা হয়েছে অতুলের স্ত্রীও চাকরিজীবী ছিলেন। স্ত্রীর থেকে আলাদা থাকার কারণে খোরপোশ হিসাবে মাসে ৪০ হাজার টাকা করেও দেওয়া হত। এর পরেও তাঁর স্ত্রী আরও ২-৪ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের আদালতে মামলা করেছিলেন স্ত্রী। অতুলের বাবার দাবি, ওই মামলায় বার বার হাজিরা দেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশের পারিবারিক আদালতে ছুটতে হয়েছে তাঁর সন্তানকে। অন্তত ৪০ বার বেঙ্গালুরু থেকে উত্তরপ্রদেশে যাতায়াত করতে হয়েছে বলে দাবি। এমনকি আদালতের বিচার প্রক্রিয়াও সঠিক ভাবে এগোয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। মৃতের ভাইও প্রশ্ন তুলেছেন, আইন কি শুধু মহিলাদের জন্য? পুরুষদের জন্য নয়? বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীর মৃত্যু নিয়ে সমাজমাধ্যমেও চর্চা শুরু হয়েছে। এই আবহেই কেন্দ্রের তরফে পারিবারিক আদালতের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হল।