নরোত্তম মিশ্র। ফাইল চিত্র।
রাত গড়ালেও ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় রামনবমীর মিছিল নিয়ে তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে গান এবং ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক স্লোগান থেকে উত্তেজনা এবং তার পরে পরস্পরের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়া দিয়ে গোলমালের শুরু। রবিবার, রামনবমীর গভীর রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের খরগোনে যে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়, তার জন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দিকেই আঙুল তুললেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র।
খরগোনের ঘটনা প্রসঙ্গে মঙ্গলবার তিনি জানিয়ে দেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাই ওই ঘটনার জন্য দায়ী এবং তাদের কাউকেই ছাড়া হবে না। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার জন্য একাধিক বাড়ি এবং দোকান বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন একজনও দোষীকে ছাড়া হবে না এবং সে দিনের ঘটনার জন্য রাজ্যের আইন মেনে ‘দোষী’দের কাছ থেকেই ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৯০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজ্যের বিরোধী কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর ব্যাপারে প্রতিবেশী উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে পাল্লা দিতে মরিয়া শিবরাজ-নরোত্তমদের পরিচালিত সরকার ও প্রশাসন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, এই বিদ্বেষ তত বেশি করে ছড়ানো হবে। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘুদের ‘শায়েস্তা’ করতে যোগী যে ভাবে বুলডোজ়ারকে এমনকি ভোটের প্রচারেও ব্যবহার করে নিজেকে ‘বুলডোজ়ার বাবা’ হিসেবে তুলে ধরেছেন, তার সঙ্গে পাল্লা দিতে শিবরাজ নিজেকে ‘বুলডোজ়ার মামা’ বলে তুলে ধরতে চাইছেন। তাই খরগোনে পুলিশি তদন্ত বা বিচার কোনওটারই তোয়াক্কা না করে একতরফা নির্দেশে একাধিক বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দিয়ে নাম কিনতে চাইছেন তিনি।
এই বিষয়টি নিয়ে আজ সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। বুলডোজ়ার-কে বিজেপি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি জানান, ওরা মূল্যবৃদ্ধি বা বেকারত্বকে বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙতে পারবে না। রাহুলের কথায়, ‘‘ওদের বুলডোজ়ারে শুধু ঘৃণা এবং সন্ত্রাস ছড়ানো হয়।’’ কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, কর্নাটকের মতো রাজ্যে সংখ্যালঘুদের নিশানা করা হয়েছে। তাদের ধর্মস্থানের সামনে উত্তেজনা ছড়ানো হয়েছে। এমনকি অনেকেরই দোকানও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।