ছবি:পিটিআই।
হঠাৎ করেই এক দিন নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এবং কয়েক দিন পরেই জানা যায় জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছেন কাশ্মীরের যুবক। গত কয়েক বছর ধরে চলা এই প্রবণতাকে এ বার অন্য মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। সে রকম কয়েকটি ঘটনাই পর পর সামনে এসেছে। আর তা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এখন হামলা চালানোর সময় জঙ্গিরা ‘বডি ক্যামেরায়’ তার ভিডিয়ো করছে। সেই ভিডিয়ো আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে তাদের ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। দু’দিন আগেই বারামুলাতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেই ঘটনায় পাঁচ জওয়ান নিহত হন। নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় তিন জঙ্গিও।
পুলিশের ধারণা জম্মু-কাশ্মীরের নতুন জঙ্গি শাখা পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট (পিএএএফ)-এর সদস্যরা এই হামলা চালিয়েছে। সেনা সূত্রে খবর, জঙ্গিদের কাছ থেকে যে ভিডিয়ো উদ্ধার হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীর উপর গেরিলা আক্রমণের জন্য আপেল বাগানে অপেক্ষা করছে। কী ভাবে হামলা চালাচ্ছে, কী ভাবে নিজেদের অবস্থান ঠিক করছে, কোন জায়গা থেকে হামলা চালালে বেশি জওয়ান মারা পড়বে— সব রেকর্ড হয়েছে ওই ভিডিয়োও। তার পর সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিয়োটি ছাড়ার আগে সেটাকে এডিট করে জঙ্গিদের পরিচিতি, সঙ্গে গান জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ মিনিটের ওই ভিডিয়ো ক্লিপে দেখা গিয়েছে, দুই সিআরপিএফ জওয়ানকে মাথায় গুলি করার পর এক জঙ্গি তার সঙ্গীকে গুলি থামানোর নির্দেশ দিচ্ছে কাশ্মীরি ভাষায়।
আরও পড়ুন: শাস্তি মঞ্জুর, ক্ষমা নয়, প্রশান্ত ভূষণের মানসিকতাকে কুর্নিশ নেটাগরিকদের
কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি দলে নাম লেখানোর পর সেই বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতাটা গত ১০ বছর ধরে চলছে। কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনীর উপর হামলা চালানোর সময় তার ভিডিয়ো তুলে সেই ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটানাটি প্রথম ঘটে ২০১৩-য়। শ্রীনগরের হায়দারপোরায় সেনাদের উপর হামলা চালানোর সময় স্থানীয় জঙ্গি ইরশাদ গানিয়া সেই ভিডিয়োটি তোলেন। তার পর ছড়িয়ে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই প্রবণতাটাকেই অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে জঙ্গিরা, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, এ ধরনের হামলার ভিডিয়ো ছড়িয়ে দিয়ে জঙ্গিরা নিজেদের কাজকে গৌরবান্বিত করার চেষ্টা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জঙ্গি কার্যকলাপকে একটা অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল নিহত হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানি। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যকলাপকে গৌরবান্বিত করার কাজ ২০১০ সাল থেকেই শুরু করে দিয়েছিল বুরহান।