অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন রামু। ছবি ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
হায়দরাবাদে কাজ করতে গিয়ে লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রামু। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ধন্তত্বা ও বাচ্চা মেয়ে অনুরাগিনী। তাঁদেরই নিয়ে হেঁটে মধ্যপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেন রামু। পথে কোথাও বাস বা লরি পাননি। এতটা পথ হাঁটতে গিয়ে সমস্যায় হচ্ছিল ধন্তত্বার। কাঠের পাটায় চাকা লাগিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে বসিয়ে ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মঙ্গলবার নিজের গ্রামে ফিরেছেন রামু। সেই ঘটনার ভিডিয়ো এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, চাকা লাগানো কাঠের পাটাতনে মেয়ে অনুরাগিনীকে নিয়ে বসে আছেন ধন্তত্বা। আর রামু একটি দড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের। এ ভাবেই মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলার গ্রামে পৌঁছেছেন তিনি।
গ্রামে ফিরে আসার যাত্রা নিয়ে এক সংবাদ মাধ্যমকে রামু বলেছেন, ‘‘প্রথমে মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটছিলাম আমি। কিন্তু পুরো রাস্তা হেঁটে আসা আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। আসার পথে জঙ্গল থেকে কাঠ জোগাড় করে ওই পাঠাতন বানাই। তাতেই স্ত্রীকে চাপিয়ে ফিরছিলাম।’’
তেলঙ্গানা থেকে মহারাষ্ট্র হয়ে নিজের জেলায় ফেরেন রামু। পথে মহাকুমা শাসক নীতেশ ভার্গভের নেতৃত্বাধীন পুলিশদের দল দেখতে পান তাঁদের। তাঁরাই খাবার ও পানীয় জল দেন রামুদের। রামুর মেয়ের জন্য চটিও কিনে দেন তাঁরা। এ ব্যাপারে নীতেশ ভার্গভ বলেছেন, ‘‘আমরা ওই পরিবারের শারীরিক পরীক্ষা করাই। তার পর বালাঘাটে গ্রামে যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করি।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অপর একটি ভিডিয়োতে এক পরিযায়ী শ্রমিককে দেখা যাচ্ছে, বলদ সঙ্গে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন গাড়ি। সেই গাড়িতে বসে রয়েছে তাঁর ভাই ও শাশুড়ি। মও থেকে ২৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এ ভাবেই নিজের গ্রাম পাত্থর মুন্ডলায় পৌঁছেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফের পথ দুর্ঘটনা, দুই রাজ্যে মৃত ১৪ পরিযায়ী শ্রমিক
রামু বা মধ্যপ্রদেশের শ্রমিকের এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। লকডাউনে শুরু হতেই পরিযায়ী শ্রমিকের দুর্দশার চিত্র দেখা গিয়েছে সারা দেশ জুড়ে। হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণও হারিয়েছেন বহু শ্রমিক।
আরও পড়ুন: রাস্তাতেই প্রসব, ফের হাঁটলেন শকুন্তলা