ছবি সংগৃবীত।
ঘোষণার পরে পরপর দু’বার তালিকা প্রকাশ করেও, ফের তা প্রত্যাহার করে নিতে হল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। তবু ঠিক হল না, কোনটি স্বদেশি জিনিস আর কোনটা বিদেশি। আধা সামরিকবাহিনীর ক্যান্টিনে কোন স্বদেশি দ্রব্য পাওয়া যাবে, তার একটি তালিকা সকালে প্রকাশ করা হলেও, বিতর্কের মুখে বিকেলে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ‘আত্মনির্ভর ভারতের’ পথে হাঁটতে গিয়ে শুরুতেই হোঁচট খেল কেন্দ্র। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গেই কেন সেনাক্যান্টিন স্বদেশি দ্রব্যের পথে হাঁটবে না!
আধা সামরিকবাহিনীর ওই ক্যান্টিনের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ‘ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড রিহ্যাবিলেটশন বোর্ড’। পদাধিকার বলে যার চেয়ারম্যান সিআরপিএফ বাহিনীর ডিজি। বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা সিআরপিএফের ডিজি এ পি মহেশ্বরী আজ বিবৃতি দিয়ে জানান, যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে একাধিক ভুল থাকায় তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি ভুল করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নতুন তালিকা কবে আসবে, তা স্পষ্ট করেননি চেয়ারম্যান।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত মাসেই ঘোষণা করেছিলেন, ১ জুন থেকে আধা সামরিকবাহিনীর ক্যান্টিনে কেবল মাত্র স্বদেশি জিনিসই বিক্রি করা হবে। সেই মতো একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর পর আজ ফের একটি তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় পুলিশ কল্যাণ ভাণ্ডার (কেপিকেবি)। যাতে তিনটি শ্রেণি ভাগ করা হয়। প্রথম শ্রেণিতে দেশীয় কাঁচামালে দেশে তৈরি দ্রব্য, দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিদেশ থেকে আসা কাঁচামাল কিন্তু এ দেশে প্রস্তুত জিনিস ও তৃতীয় শ্রেণিতে রাখা হয় বিদেশ থেকে সরাসরি বিক্রির জন্য নিয়ে আসা পণ্য। কেপিকেবি-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জিনিস ক্যান্টিনে পাওয়া যাবে। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ১০২৬ জিনিস ক্যান্টিনে আজ থেকে আর বিক্রি হবে না। প্রসঙ্গত, ওই ক্যান্টিনগুলি থেকে আটটি আধা সামরিকবাহিনীর ১০ লক্ষ পরিবারের প্রায় ৫০ লক্ষ লোক কেনাকাটা করে থাকেন। আজ বিতর্কের সূত্রপাত হয় তৃতীয় তালিকা নিয়ে। তালিকায় বলা হয়েছে স্কেচার্স, রেড বুল, ফেরা ইন্ডিয়া-র মতো সাতটি সংস্থার দ্রব্য ক্যান্টিনে পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া কলগেট পামোলিভের বডি ওয়াশ, মাউথ ওয়াশ, হ্যাভেলস্-এর ইস্ত্রি, হেয়ার স্ট্রেটনার, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন-এর হরলিক্স ছাড়া নীলকমল সংস্থার কিছু আসবাব, বাজাজ ইলেকট্রনিক্স ও টাইমেক্সের মতো সংস্থার বেশ কিছু দ্রব্য পাওয়া যাবে না। ওই তালিকা সামনে আসতেই অভিযোগ ওঠে, এর মধ্যে একাধিক দ্রব্যের কাঁচামাল বিদেশ থেকে এলেও, সেগুলি ভারতে তৈরি হয়। নীলকমল বা বাজাজের মতো সংস্থার দ্রব্য কেন পাওয়া যাবে না, সেই প্রশ্নও ওঠে।
আরও পড়ুন: ‘মিত্রোঁ’ তো পাক অ্যাপ! নেট দুনিয়ায় কটাক্ষ