মেহুল চোক্সী। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
জামিন পেয়ে অ্যান্টিগায় ফিরেই ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাঠগড়ায় তুললেন পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোক্সী। তাঁর অভিযোগ, অ্যান্টিগা থেকে মোটেই তিনি পালিয়ে যাননি। বরং ভারতীয় গোয়েন্দারাই তাঁকে অপহরণ করে ডমিনিকা নিয়ে যান। সেখানে তাঁর উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়।
অসুস্থতার জেরে সম্প্রতি ডমিনিকার আদালত মেহুলের জামিন মঞ্জুর করে। তার পর প্রায় ৫১ দিন হেফাজতে কাটিয়ে বুধবারই অ্যান্টিগা ফেরেন তিনি। সেখান থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার একটি সংবাদমাধ্যমে মেহুল বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরেছি। তবে যে নিদারুণ অত্যাচার চালানো হয়েছে আমার উপর, তাতে আমার মন এবং শরীরে চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়েছে। স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে, সমস্ত ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পর, সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পর আমাকে অপহরণ করতে আসবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।’’
ডমিনিকা থেকে অ্যান্টিগা রওনা দেওয়ার পথে মেহুল চোক্সী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
অপহরণ করার সময় তাঁকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয় এবং ধাক্কা দিয়ে এক নৌকো থেকে অন্য নৌকোয় ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন মেহুল। শুধু তাই নয়, অপহরণ করে ডমিনিকায় নিয়ে যাওয়ার পর অনেক দেরিতে তাঁকে আদালতে তোলা হয় বলেও দাবি তাঁর।
মেহুল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থাকায় কোথাও যেতে পারছিলাম না। তাই বহু বার ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে অ্যান্টিগায় এসে আমাকে জেরা করতে বলেছিলাম। সবরকম ভাবে সহযোগিতা করতে তৈরি ছিলাম। কিন্তু এমন অমানবিক ভাবে অপহরণ করা হতে পারে, তা ভাবতেও পারিনি।’’ ভারতীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে মিলে ‘বান্ধবী’ বারবরা জারাবিকা তাঁকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন মেহুল।
গত ২৩ মে অ্যান্টিগা থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মেহুল। বিশেষ কারও সঙ্গে নৈশভোজে বেরিয়ে তার পর আর ফেরেননি বলে জানা যায় সেই সময়। পরে রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তাঁর গাড়ি। তিনি কিউবায় পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন বলে সেই সময় জল্পনা শুরু হয়। যদিও কয়েক দিন পর ডমিনিকায় গ্রেফতার হন তিনি।
তবে মেহুলের দাবি, তাঁর পরিবার অ্যান্টিগায় রয়েছেন। তাঁদের ছেড়ে পালানোর কথা এক বারেও ভাবেননি তিনি। পালাতে চাইলে টাকা-পয়সা অখবা মূল্যবান জিনিস নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন। এ সবের কিছুই ঘটেনি কারণ ভারতীয় গোয়েন্দারাই তাঁকে অপহরণ করে ডমিনিকায় নিয়ে যান।