শিশির ও সুনীল —ফাইল চিত্র।
দলত্যাগ বিরোধী আইনে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে চিঠি পাঠাল লোকসভার সচিবালয়। চিঠি পাঠানো হয়েছে কে রঘু রাম কৃষ্ণম রাজু নামে অন্ধ্রপ্রদেশের এক সাংসদকেও। লোকসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, তিন জনকেই বৃহস্পতিবার পাঠানো এই চিঠির জবাব ১৫ দিনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে বৃহস্পতিবার শিশির বলেন, ‘‘তৃণমূল লোকসভায় যে অভিযোগ জানিয়েছে সেই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আমার কাছে এখনও কোনও কাগজ এসে পৌঁছয়নি। তবে লোকসভার স্পিকার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। এতে আমার কিছু বলার নেই। স্পিকার যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি তা মাথা পেতে মেনে নেব।’’
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই তৃণমূলের মধ্যে বেসুরো গাইতে শুরু করেছিলেন শিশির ও সুনীল। শিশির বিজেপি-তে যোগ না দিলেও নির্বাচনী প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। অন্য দিকে, খাতায় কলমে বিজেপি-তে যোগ না দিলেও বিজেপি-র সভায় গিয়ে পতাকা হাতে নিয়েছিলেন সুনীল। শিশির-পুত্র শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। শুধু তাই নয়, নন্দীগ্রাম থেকে জিতে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। এই সব ঘটনায় শিশিরের সঙ্গে তৃণমূল শিবিরের দূরত্ব ক্রমেই বেড়েছে। শিশির ও সুনীলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়ে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
অন্য দিকে, রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে সরব হয়েছেন শুভেন্দুও। বিধানসভায় বিজেপি-র খারাপ ফলের পরে দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যদিও খাতায় কলমে তিনি কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক। এই বিষয়কে হাতিয়ার করে বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে মুকুলকে। এই ঘটনা নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন শুভেন্দু। মুকুলকে সরানোর দাবিতে রাজ্যপালের দ্বারস্থও হয়েছে রাজ্য বিজেপি। ১৬ জুলাই শুক্রবার বিধানসভায় স্পিকারের কাছে শুনানিতে যাওয়ার কথা শুভেন্দুর। তার আগেই লোকসভার সচিবালয়ের এই চিঠির লক্ষ্য আসলে মুকুল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।