অভিযুক্ত বিজেপি নেতা। ছবি ফেসবুক থেকে।
বিজেপি সহ-সভাপতির রিসর্টে শিশু ও কিশোরীদের আটকে রেখে মধুচক্র চালানোর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল মেঘালয়ে। রিসর্টে হানা দিয়ে তালাবন্ধ অস্বাস্থ্যকর ঘর থেকে ছয় শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে রাজ্যের বিজেপি সহ-সভাপতি বার্নার্ড এন মারাক ওরফে রিম্পুর খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, পশ্চিম গারো পার্বত্য জেলার তুরা এলাকায় বিজেপি সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ ওঠে। শিশুদের রিসর্টে আটকে রেখে সেখানে যৌনপেশার কাজে লাগানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগ পেয়েই বিজেপি নেতার রিসর্টে হানা দেয় পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘালয় পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বার্নার্ডের রিসর্টে মধুচক্র চালানো হচ্ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘উদ্ধার হওয়া সমস্ত শিশুই আতঙ্কিত ও বিধ্বস্ত। তারা ঠিক করে কথাও বলতে পারছে না। মনে করা হচ্ছে রিম্পু ওই জায়গাটি (রিসর্ট) যৌনপেশার জন্য ব্যবহার করতেন।’’
যদিও পুলিশের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা। বার্নার্ড বলেছেন, ‘‘যাদের আটক করা হয়েছে, তারা কেউই অশালীন কোনও কাজে জড়িত নয়। পুলিশ জোর করে রিসর্টে ঢুকে হেনস্থা করেছে। কিশোরীদের হেনস্থা করেছে। আমি ওদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ এই প্রসঙ্গে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বিরুদ্ধে নিশানা করেছেন ওই বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, কোনও পরোয়ানা ছাড়াই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে গ্রেফতার করতেই মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন রিম্পু। তাঁর দাবি, এই ঘটনায় তিনি পলাতক নন। বরং তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করছেন।
অন্য দিকে, মুখে কুলুপ এঁটেছেন মেঘালয়ের বিজেপি নেতৃত্ব। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনও সে রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম রিম্পুর রিসর্টে অনৈতিক কাজের খবর পাওয়া যায়। ওই মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান যে, এক সপ্তাহ ধরে তাঁর মেয়ে নিখোঁজ। পরে তাঁর মেয়ের খোঁজ পাওয়া যায় তুরা এলাকায়। ওই কিশোরীকে একাধিক বার যৌন হেনস্থা করা হয়েছে, তদন্তে নেমে এই তথ্য পায় পুলিশ। পকসো আইনে সে সময় মামলা রুজু করা হয়।
আদালতে ওই কিশোরী জানায়, তাকে ও তার এক বন্ধুকে রিম্পুর বাগানে নিয়ে যান মূল অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর এক বন্ধু। সেখানে একটা ঘরে তাকে তিন বার যৌন হেনস্থা করা হয়। এই ঘটনার পাশাপাশি বিজেপি নেতার ওই রিসর্টে মধুচক্রের কারবার সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ মৌখিক ভাবে পায় পুলিশ। তার পরই পুলিশি নজরে আসে ওই রিসর্ট।