Meghalaya Assembly Election 2023

অন্য মুকুলে মেঘালয়ের ভোটে নজর কেড়ে নিল তৃণমূল, তবে মণিপুরের ‘রেকর্ড’ ছুঁতে পারল না

বাংলার মতো মেঘালয়েও তৃণমূলের এক ‘মুকুল’ রয়েছেন। তাঁর উপরে ভরসা করেই ওই রাজ্যে ২০২১ সালে ১১ জন কংগ্রেস বিধায়ককে দলে টেনে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল তৃণমূল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শিলং শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ১৬:৩৮
Share:

মেঘালয়ের বিধানসভা ভোটে এবারই প্রথম আসন জিতল তৃণমূল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দেড় বছর আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা-সহ কংগ্রেসের ১২ জন বিধায়ককে দলে নিয়ে মেঘালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েছিল তৃণমূল। পেয়েছিল প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও। এ বারের বিধানসভা ভোটে দু’অঙ্কের আসনে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল সরকার গড়ায় ‘নির্ণায়ক ভূমিকা’ নেবে বলে দাবি করেছিলেন সে রাজ্যের তৃণমূল নেতারা। কিন্তু ফলাফল বলছে, সে আশা পূরণ হচ্ছে না।

Advertisement

যদিও এ কথা অনস্বীকার্য যে, সামগ্রিক ভাবে প্রায় এক দশক পরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আর একটি রাজ্যে নজরকাড়া ফল করেছে মমতার দল। ২০১২ সালে মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচনে ১৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। তারা জিতেছিল ৭টি আসনে। বাংলার বাইরে এ পর্যন্ত কোনও বিধানসভা ভোটে সেটিই তৃণমূলের সবচেয়ে ভাল ফল। মেঘালয়ে সে রেকর্ড তারা ছুঁতে পারেনি। কিন্তু ৬০ আসনের মধ্যে ৫৬টিতে লড়ে প্রায় ১৩.৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে জোড়াফুল শিবির। জয় এবং এগিয়ে থাকার ধারাবিবরণী বলছে, মেঘালয়ের ৫টি বিধানসভা কেন্দ্র তাদের দখলে আসতে চলছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮-র বিধানসভা ভোটে মেঘালয়ে মাত্র ৮টি আসনে লড়েছিল তৃণমূল। ভোট পেয়েছিল ০.৩৫ শতাংশ। সেই নিরিখে দেখতে গেলে তারা মেঘালয় নিয়ে আশান্বিত হতেই পারে।

দুই জাতীয় দল বিজেপি এবং কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে মেঘালয়ে তৃতীয় স্থানে (এনপিপি এবং ইউডিপির পর) উঠে এসেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোটের প্রবণতা স্পষ্ট হওয়ার পরে দলনেত্রী মমতা বিকেলে বলেন, ‘‘মেঘালয়ে তো বিজেপি ৩টে আসন পাচ্ছে! একে ওদের জয় বলা যায় না!’’ ঘটনাচক্রে, মেঘালয়ে ভোটের কাজে-যাওয়া তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ জোর দিয়ে বলছিলেন, তাঁরা সেখানে বিজেপি এবং কংগ্রেসের চেয়ে বেশি আসন পাবেন। ফলে সে দিক দিয়েও তাঁরা ‘সফল’।

Advertisement

২০২১ সালে বিপুল আসন নিয়ে তৃণমূল তৃতীয় বারের জন্য বাংলায় ক্ষমতায় আসে। ওই বছরেরই অক্টোবরে ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে মেঘালয়ের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন স্পিকার চার্লস পিংরোপের মতো প্রভাবশালী বিধায়ক। তাঁরা দু’জনেই এ বার জোড়াফুল প্রতীকে প্রার্থী। গারো পাহাড় স্বশাসিত পরিষদ এলাকায় ‘প্রভাব’ রয়েছে মুকুলের। অন্য দিকে, পিংরোপ খাসি জনগোষ্ঠীর প্রভাবশালী নেতা। তাঁরা দু’জনেই জিততে চলেছেন। তবে ভোটের ফল বলছে, মুকুলের ‘গড়’ পশ্চিম গারো পাহাড়ে ভাল ভোট পেলেও অন্যত্র প্রত্যাশা পূরণ হয়নি তৃণমূলের। খাসি পাহাড় থেকে জিতেছেন এক মাত্র পিংরোপ।

ঘটনাচক্রে, বাংলার পরে একমাত্র মেঘালয় থেকেই লোকসভায় সাংসদ পেয়েছে তৃণমূল। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রাক্তন স্পিকার পূর্ণ অ্যাজিটক (পিএ) সাংমা মেঘালয়ের গারো কেন্দ্রে জিতেছিলেন তৃণমূলের টিকিটে। সে বারের লোকসভা ভোটে দেশে মাত্র দু’টি আসনে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রথম, সাংমা। এবং দ্বিতীয় দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে মমতা। ঘটনাচক্রে, প্রয়াত পূর্ণের ছেলে কনরাড এখন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দল এনপিপির সঙ্গেই তৃণমূলের মূল লড়াই হয়েছে। কনরাড জিতলেও পূর্ণের আর এক ছেলে জেম্‌স বিধানসভা ভোটে হেরেছেন তৃণমূলের কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement