হিন্দুস্থান সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস লিমিটেড (এইচএমডি)। সিরিঞ্জ প্রস্তুতকারী বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থা। এই মুহূর্তে বিশ্বের ১২০টি দেশ করোনামুক্ত হতে টিকাকরণের জন্য এই সংস্থার দিকেই চেয়ে রয়েছে।
ভারত সরকারের তরফ থেকে কোভিড প্রতিষেধক টিকাকরণের জন্য সম্প্রতি নতুন করে আবার ২৬ কোটি ৫০ লাখ অটো ডিসেবল সিরিঞ্জের অর্ডার পেয়েছে। অর্ডার এসেছে ব্রাজিল, জাপান-সহ আরও অনেক দেশ থেকেও।
বিশ্বকে করোনামুক্ত করতে দ্রুত গতিতে সিরিঞ্জ প্রস্তুত করে চলেছে সংস্থাটি। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ৩ লাখ ৭৫ হাজার সিরিঞ্জ তৈরি করছে সংস্থাটি।
কিন্তু জানেন কি, একটা সময় এসেছিল যখন অর্থের জন্য অন্য সংস্থার কাছে হাত পাততে হয়েছিল এইচএমডি-কে!
১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সংস্থা। প্রতিষ্ঠাতা নারিন্দ্র নাথ। ছোট থেকেই নারিন্দ্র স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কম দামে চিকিত্সার সরঞ্জাম সরবরাহ করার।
পড়াশোনা শেষ করেই তাই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই সংস্থার। তাঁর হাত ধরেই একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকে উত্থান ঘটে সংস্থার।
এখন ভারতের সবচেয়ে বড় ডাক্তারি সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থা এটিই। ভারতের পাশাপাশি সারা বিশ্ব জুড়েই সরঞ্জাম সরবরাহের অর্ডার পায় সংস্থাটি। বিশ্বকে করোনামুক্ত করার দৌড়েও নাম লিখিয়েছে ফেলেছে।
ভারত ছাড়াও সব মিলিয়ে ১২০টি দেশকে তারা কোজাক এবং ডিসপোভ্যান সিরিঞ্জ সরবরাহ করছে এই মুহূর্তে। এই সিরিঞ্জ দিয়েই টিকাকরণ চলছে ওই সমস্ত দেশে।
৯৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় নারিন্দ্রের। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনিই ছিলেন সংস্থার চেয়ারম্যান। মৃত্যুর পর সংস্থার দায়িত্ব হাতে তুলে নেন তাঁরই ছেলে রাজীব।
এইচএমডি সংস্থাটি মূলত পারিবারিক ব্যবসা তাঁদের। তবে ১৯৯৫ সাল নাগাদ আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল তাঁদের সামনে। অনেক শেয়ার বিক্রি করে দিতে হয়েছিল।
পরবর্তীকালে অবশ্য রাজীব তা পুনরুদ্ধার করে নেন। ফের নারিন্দ্রর পরিবারের হাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সংস্থাটির।
কোভিড টিকাকরণে কোনও সমস্যা যাতে তৈরি না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই অটো-ডিসেবল সিরিঞ্জ তৈরি করছে সংস্থাটি।
ফাইজার ভ্যাকসিনের জন্য ০.৩ মিলিলিটার সিরিঞ্জ, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ভারত বায়োটেকের জন্য ০.৫ মিলিলিটারের সিরিঞ্জ প্রস্তুত করে চলেছে।
এ ছাড়াও সারা বিশ্ব জুড়েই পীত জ্বর, বিসিজি, হেপাটাইটিস বি-সহ বিভিন্ন টিকাকরণের জন্যও সিরিঞ্জ সরবরাহ করে থাকে তারা।