মেধা পাটকর। —ফাইল চিত্র
একটি মানহানির মামলায় সমাজকর্মী মেধা পাটকরকে পাঁচ মাসের জন্য কয়েদবাসের সাজা শোনাল দিল্লির একটি আদালত। মেধার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি করেছিলেন দিল্লির বর্তমান লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয়কুমার সাক্সেনা। সোমবার দিল্লির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাঘব শর্মা জানান, মেধার বয়স এবং স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁকে এক বা দু’বছরের জেলের মতো কোনও কঠোর সাজা পালনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে না। তবে মেধার মিথ্যা দাবির জন্য সাক্সেনার সামাজিক সম্মানহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত। এই কারণে মেধাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গুজরাতে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম মুখ হিসাবে রাতারাতি প্রচারের আলোয় উঠে এসেছিলেন মেধা। ২০০০ সালে সাক্সেনা ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সিভিল লিবার্টিজ়’ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। এই সংগঠনটি আগাগোড়া নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। নর্মদা নদীতে বাঁধ দেওয়ার বিরুদ্ধে মেধাদের যে আন্দোলন, তার বিরোধিতা করে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে সাক্সেনার ওই সংগঠন। তার পাল্টা একটি প্রেস বিবৃতি জারি করেন মেধা।
ওই বিবৃতিতে মেধা দাবি করেছিলেন, হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচারের সঙ্গে যুক্ত সাক্সেনা। দিল্লির বর্তমান লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে গুজরাত সরকারের ‘এজেন্ট’ বলেও অভিহিত করেছিলেন মেধা। কিন্তু মেধার দাবিতে ‘ব্যথিত’ সাক্সেনা ২০০১ সালে আমদাবাদের একটি আদালতে প্রবীণ সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০০৩ সালে মামলাটি দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।
সোমবার মেধার বিরুদ্ধে দেওয়া নির্দেশে আদালত বলেছে, “এটা স্পষ্ট যে সম্মানহানির উদ্দেশ্য নিয়েই প্রেস বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছিল।” তবে এখনই হয়তো জেলে যেতে হবে না মেধাকে। কারণ সোমবার বিচারক জানিয়েছেন, আগামী এক মাস পর্যন্ত এই শাস্তি স্থগিত রাখা যেতে পারে। আদালতের নির্দেশ শুনে মেধা বলেন, “সত্য কখনও হারতে পারে না। আমরা কখনও কারও সম্মানহানি করার চেষ্টা করিনি। আমরা কেবল আমাদের কাজটুকুই করেছি। আমরা আদালতের নির্দেশের বিরোধিতা করব।” অনেকেই মনে করছেন, এর পর উচ্চ আদালতে যেতে পারেন মেধা।