বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকারের মনোভাব নিয়ে আমেরিকার মাটিতে প্রশ্নের মুখে পড়লেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ওয়াশিংটনে আজ একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আয়োজিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এই প্রসঙ্গ ওঠায় বিদেশমন্ত্রীর জবাব, বিষয়টি ‘রাজনৈতিক’ এবং দেশের ‘ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির’ সঙ্গে যুক্ত। রাজনৈতিক কারণেই এই প্রচার কিছু মানুষ বিদেশে করে থাকেন। তিনি সরকারের বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন কোনও বৈষম্য ভারতে নেই। যা রয়েছে তা ‘তর্কপ্রবণতা’, ‘বৈচিত্রের বিচিত্র স্বর’।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গত ন’বছরে ধারাবাহিক ভাবে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন মঞ্চ অসহিষ্ণুতা, সংখ্যালঘু পীড়ন, মানবাধিকারের অমর্যাদা সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেছে। কখনও বিদেশমন্ত্রী কখনও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র যার কড়া জবাব দিয়েছেন। আমেরিকান কংগ্রেসের রিপোর্টেরও কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। এ দিনও তার অন্যথা হল না। আমেরিকা সফরের শেষ দিনে সংখ্যালঘু নিয়ে প্রশ্নের জবাব বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আজকের বিশ্বায়নের যুগে দুনিয়াতে আপনারা অনেক অভিযোগ, নালিশ শুনতে পান। কিন্তু এই অভিযোগের অনেকটাই রাজনৈতিক। আমাদেরও কিন্তু ভোটব্যাঙ্ক সংস্কৃতি রয়েছে। অনেকেই একটু বিশেষ নজরে অনেক কিছু দেখে থাকেন।”
জয়শঙ্কর বলেন, “আজকের ভারতের দিকে যদি তাকান দেখবেন সমাজে এক বিপুল পরিবর্তন এসেছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হল সমাজকল্যাণ যোজনাগুলি চালু করায় স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো ক্ষেত্রে তাঁদের সুযোগ করে দেওয়া যাঁদের মাথা পিছু বছরে আয় দু লাখ ১০ হাজার টাকার কম। বিশ্বে এটা আগে কেউ করেননি।” পশ্চিমকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বৈচিত্র থাকলেই কথার লড়াই হবে। আমাদের দেশে কাউকেই জোর করে কিছু মানানো যায় না। আমরা তর্কপ্রবণ। ফলে বাদানুবাদ থাকবেই। সেটা অন্য দেশে বসে অন্য সংস্কৃতির মধ্যে থেকে বোঝা যায় না। অনেকেই (দেশ) যেটা করছে, পাশের ঘরের বাদানুবাদ অন্য ঘরে বসে শুনে তার থেকে কিছু বাক্য তুলে নিয়ে সামগ্রিক বিচার করছে। অথচ তারা পাশের ঘরের লোকগুলিকে চেনেই না। এটা ঠিক নয়। প্রত্যেক সমাজেই কিছু কিছু বৈষম্য থাকে আলাদা কারণে।”
কংগ্রেস সূত্রে জয়শঙ্করের এই যাবতীয় যুক্তির পাল্টা বলা হয়েছে, “সংখ্যালঘু নিয়ে কোনও প্রশ্নের মুখে পড়লেই মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্ব একটি ধরাবাঁধা উত্তর দেন। তা হল তারা সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু গরিব মুসলিম রেশন পাচ্ছেন বলে সামগ্রিক ভাবে মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখার কোনও যুক্তি নেই। দেশে বিদ্বেষমূলক আবহাওয়া চলছে এবং সেই অনুযায়ী প্রচারও চলছে।”