ফাইল চিত্র
রামমন্দিরের শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশে এক দিকে দলিত ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অন্য দিকে, রাজনৈতিক সূত্রের খবর, ওই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে নিজের মধ্যপন্থা বজায় রেখে রাজনীতি করছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তিনি লোকসভা ভোটের পর থেকেই, বিজেপিকে সরাসরি আক্রমণ না-করে তোপের মুখ ঘুরিয়ে রেখেছেন কংগ্রেসের দিকে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপ রয়েছে বিএসপি নেত্রীর উপর। ব্রাহ্মণ ভোটকে সঙ্গে নেওয়ার পাশাপাশি নিজের দলিত ভোট ব্যাঙ্ককে সুসংহত করাটা তাঁর বর্তমান কৌশলের অঙ্গ বলে মনে করছে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক সূত্র।
আগামিকাল অযোধ্যার রামমন্দিরের ভূমি পূজা অনুষ্ঠানে ২০০ জন সাধু সন্তকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। কিন্তু আমন্ত্রিতদের মধ্যে কোনও দলিত প্রতিনিধি নেই। মায়াবতী টুইট করে এ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “স্বামী কানহাইয়া প্রভুনন্দন গিরিকে আমন্ত্রণ জানালে তার একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়ত। জাতপাতহীন সমাজের জন্য সংবিধানের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হত।”
ঘটনা হল, অখিল ভারতীয় অখাড়া পরিষদের অধীনে একমাত্র দলিত মহামণ্ডলেশ্বর হলেন এই স্বামী কানহাইয়া প্রভুনন্দন গিরি। যিনি নিজে নিমন্ত্রণ না-পেয়ে অসন্তোষ জানিয়ে বলেছেন, তাঁকে দলিত বলে অবহেলা করা হয়েছে। উচ্চবর্ণের মানুষই আমন্ত্রিত হয়েছেন শুধু। তাঁর বক্তব্য, “রাম নিজে তাঁর জীবনে এবং কাজে সমাজের পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁর পুজাতেই দলিতকে অবহেলা করা হচ্ছে।”
তাঁর এই বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে অখিল ভারতীয় অখাড়া পরিষদের প্রধান মহন্ত নরেন্দ্র গিরি বলেছেন, “এক জন ব্যক্তি যখন সাধু হয়ে যান তখন তাঁর আর কোনও জাতপাত থাকে না। সবাই সমান।” পাশাপাশি ওই ট্রাস্টের একমাত্র দলিত সদস্য কামেশ্বর চৌপল কানহাইয়া প্রভুনন্দনের অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, “এক জন সাধু কখনও দলিত পরিচয়ে পরিচিত হতে পারেন না। আমি নিজে দলিত। অথচ আমি রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্য।”
বিএসপি নেত্রী অবশ্য সুকৌশলে এই বিতর্কের আঁচটুকু তুলে নিয়ে গোটা বিষয়টিকে অন্য দিকে মোড় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ। মায়াবতী বলেছেন, “এই ধরনের বিতর্কে ঢোকার চেয়ে, দলিতরা এখনও যে জাতপাতের নির্যাতন, বৈষম্য এবং ঘৃণার মুখোমুখি হচ্ছে, তার প্রতিকার করার দিকে নজর ঘোরানো উচিত। এ ক্ষেত্রে পরমপূজ্য বাবাসাহেব অম্বেডকরের রাস্তা অনুসরণ করা উচিত। এটা বিএসপির পরামর্শ।”