পুলিশের উপর ছুরি নিয়ে হামলার অভিযোগ ছত্তীসগঢ়ে। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দিনেদুপুরে পুলিশের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিলেন মাওবাদীরা! ছুরির আঘাতে ঘায়েলও হয়েছেন ওই দুই পুলিশকর্মী। রবিবার সকালে ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলার একটি বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ সুকমা জেলার জাগরগুন্ডায় সাপ্তাহিক বাজার বসেছিল। সেখানেই ছিলেন কর্তব্যরত দুই পুলিশকর্মী। আচমকা মাওবাদীদের একটি দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হয়। এর পর ওই পুলিশকর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেয় তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাওবাদীদের ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। তাঁর ঘাড়ে আঘাত লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দান্তেওয়াড়ায় একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। অন্য জনের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, দলে প্রায় চার-পাঁচ জন মাওবাদী ছিলেন। তাঁরা ছুরি নিয়ে ওই দুই পুলিশকর্মীর উপর চড়াও হন। দু’জনেই আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত দান্তেওয়াড়ার এক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য শীঘ্রই তাঁকে রায়পুরে স্থানান্তরিত করা হবে।
প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন ছ’হাজার ৬১৭ জন পুলিশ, নিরাপত্তাকর্মী এবং সাধারণ নাগরিক। তবে সেই তুলনায় ২০২৩ সাল থেকে মাওবাদী-হানায় হিংসার ঘটনা ৭২ শতাংশ কমেছে। মৃত্যুও কমেছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। সম্প্রতি পিটিআইয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জানিয়েছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৭ জন পুলিশকর্মী এবং ৫০ জনেরও বেশি নাগরিক মাওবাদীদের হানায় প্রাণ হারিয়েছেন। বরং উল্টো দিকে, ২০২৪ সালে ২৫০ জনেরও বেশি মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৮১২ জন। আত্মসমর্পণ করেছেন ৭২৩ জন মাওবাদী। ইতিমধ্যেই মাওবাদীদের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য নানা পরিকল্পনা ছকতে শুরু করেছে কেন্দ্র। মাওবাদীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি আত্মসমর্পণ নীতিতেও বদল আনা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। আগামী দিনে মাওবাদকে দেশ থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল করাই এখন কেন্দ্রের লক্ষ্য।