পড়ুয়াদের বাঁচাতে গ্রামবাসীদের কয়েক জন নদীতে ঝাঁপ দেন। ছবি: সংগৃহীত।
নদীর পার ধরে দৌড়চ্ছিলেন গ্রামবাসীরা, আর তাঁদের মধ্যে কয়েক জন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘ওদের ধরো, ওদের ধরো’। তত ক্ষণে কয়েক জনকে দেখা গেল ঝপ ঝপ করে নদীতে ঝাঁপ দিলেন। নদীর জলে তখনও কালো কালো মাথাগুলো ভেসে থাকতে দেখা যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকটিকে ঘোলা জলের মধ্যে মিলিয়ে যেতে দেখা গেল।
গ্রামবাসীদের কয়েক জন হাবুডুবু খাওয়া কয়েক জনকে ধরতে পারলেন। কয়েক জন আবার হাত ফস্কেও গেল। বৃহস্পতিবার বিহারের নৌকাডুবির সে রকমই একটি মর্মান্তিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। বৃহস্পতিবার ৩০ জন স্কুলপড়ুয়াকে নিয়ে মুজফফরপুরের বাগমতী নদীতে ডুবে গিয়েছিল একটি নৌকা।
গ্রামবাসীদের তৎপরতায় ২০ জনকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ হয়ে যায় ১০ পড়ুয়া। শুক্রবার যদিও দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও নিখোঁজ আরও আট জন। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মাঝনদীতে যেতেই স্রোতের টানে উল্টে গিয়েছিল নৌকাটি। কয়েক জন সাঁতরে পারে চলে আসে। বেশ কয়েক জনকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করেন।
নদীর মাঝখান দিয়ে ভেসে যাচ্ছিল স্কুলপড়ুয়ারা। হাবুডুবু খেতে খেতে স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছিল তারা। নৌকা উল্টে যাওয়ার খবর পেতেই গ্রামবাসীরা নদীর পারে ভিড় করেন। নদীর পার ধরে ছুটতে থাকেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে থেকেই কয়েক জন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ুয়াদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সবাইকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পিছু পিছু একটি নৌকাকেও যেতে দেখা যায়। কয়েক জনকে উদ্ধার করে সেই নৌকায় তোলা হয়।
বেনিবাদের মধুপুর পাত্তি গ্রাম থেকে ভাটগামায় স্কুল বা দোকান, বাজারে যেতে হলে নৌকাই একমাত্র ভরসা। সড়কপথে যেতে হলে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়। তাই কম সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে গ্রামবাসীরা নৌকাতেই যাতায়াতে অভ্যস্ত। পড়ুয়ারাও নদী পার হয়েই স্কুলে যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার পর থেকে কান্নার রোল উঠেছে মধুপুর পাত্তি গ্রামে। কোনও পরিবারের এক সন্তান, কোনও পরিবার আবার দুই সন্তানকেই হারিয়েছে এই দুর্ঘটনায়।