মহারাষ্ট্রে বাঁধ ভেঙে মৃত ২৩

রাজ্য পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দেহগুলি উদ্ধারের জন্য যৌথ ভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৩
Share:

দুর্যোগ: নাগাড়ে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলস্তর। জলের তোড়ে ভাসছে মুম্বই নগরী। বুধবার। এপি

দু’দিনের তুমুল বৃষ্টিতে মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলায় তিওয়ারে নদীবাঁধ ভেঙে ২৩ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ বাঁধটি ভেঙে ৭টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১১টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রত্নগিরির চিপলুন তালুকের তিওয়ারে জলাধারটির ২০ লক্ষ ঘন মিটার জলধারণের ক্ষমতা রয়েছে। দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে গত কাল রাতে এটির দেওয়াল ভেঙে যায়। বন্যার তোড়ে ভেসে যায় ১২টি বাড়ি। গ্রামবাসীদের দাবি, ১৪ বছরের পুরনো বাঁধটিতে গত নভেম্বরেই ফাটল দেখেছিলেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও বাঁধ মেরামত হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, চিপলুন না দাপোলি— কোন তালুকের প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে তিওয়ারে বাঁধটি পড়ে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। মৃতের এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘প্রশাসনের গাফিলতির কারণে আজ আমাদের এই দিন দেখতে হল। আমার বাবা-মা, স্ত্রী, দেড় বছরের সন্তান নিখোঁজ। আমার ভাই ওঁর গাড়িটা সরাতে গিয়েছিল, ও ফেরেনি।’’

রাজ্য পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দেহগুলি উদ্ধারের জন্য যৌথ ভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের জলসম্পদ মন্ত্রী গিরীশ মহাজন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার দেখবে কোন পর্যায়ে গাফিলতির ফলে এই দুর্ঘটনা। তার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সিটের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। উদ্ধারকাজ ও ত্রাণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

এ দিকে, সোমবার রাতে মালাড এলাকায় দেওয়াল ধসে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে ২০ ফুটের দেওয়ালটি। মাত্র তিন বছর আগে তৈরি দেওয়াল কী ভাবে

ভেঙে পড়ল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওই দেওয়ালের পাশেই কুঁড়েঘরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিল ছ’মাসের আয়ুষ শর্মা। দেওয়াল ভেঙে জল ঢুকে তিন জন ভেসে গেলেও বেঁচে যান প্রত্যেকেই। অয়ুষের বাবা উত্তম শর্মা বলেন, ‘‘হু হু করে জল ঢুকছিল। আমি স্ত্রী-ছেলেকে প্রাণপণে ধরে রাখার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু স্রোতের টানে আলাদা হয়ে যাই। পরে ঘর থেকে আধ কিলোমিটার দূরে আয়ুষকে খুঁজে পাই।’’ দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন শিশুটির দাদু-ঠাকুমা। এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বৃহন্মুম্বই পুরসভা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement