প্রতীকী ছবি।
ফের মহার্ঘ হল পেট্রল-ডিজেল।
মাঝে অল্প বাড়লেও বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম এখনও আদৌ সে ভাবে মাথা তোলেনি। ফলে বাজেটে পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ফের ওই দুই জ্বালানির উপর বাড়তি কর ও সেস বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। যার জেরে মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়বে বলেই আশঙ্কা।
অর্থমন্ত্রী এ দিন পেট্রল-ডিজেলের উপর লিটার-পিছু এক টাকা অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক এবং রাস্তা ও পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য এক টাকা সেস চাপিয়েছেন। এতে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। অশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রেও টন প্রতি এক টাকা আমদানি শুল্ক চাপবে। এখন পেট্রল ও ডিজেলে মোট উৎপাদন শুল্ক ও সেস লিটার-পিছু যথাক্রমে ১৭.৯৮ টাকা ও ১৩.৮৩ টাকা।
বিশ্ব বাজারে তেলের দাম এখন ব্যারেল-প্রতি ৬৩ ডলারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। গত আড়াই মাসে তেলের দর কমেছে প্রায় ১১ ডলার। অর্থমন্ত্রী বাজেটে সেই দাম কমার সুবিধার কথা বললেও প্রশ্ন উঠছে, তার সুবিধা কেন আমজনতা আগে পাবে না? এমনিতেই জুনের শেষ থেকে দেশে তেলের দাম বাড়ছিল। এখন আরও বাড়বে। ডিজেলে কর বৃদ্ধির জন্য পণ্য পরিবহণের খরচ বাড়তে পারে। তাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। চাপ পড়বে আমজনতার পকেটেই।
তেলের দাম বাড়ার এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কেন্দ্রের বাজেটকে সম্পূর্ণ দিশাহীন আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, পেট্রলের দাম লিটারে আড়াই টাকা ও ডিজেলের দাম লিটারে ২ টাকা ৩০ পয়সা বাড়বে।
ডিজেলের দাম বাড়ার ফলে মূল্যবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায় ও সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। দীপঙ্করবাবুর বক্তব্য, আর্থিক সমীক্ষায় পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার বেশি থাকার কথাই বলা হয়েছে। শিল্পমহলের একাংশ অবশ্য মনে করছে, সরকারের আয়ের উৎস ততটা স্পষ্ট নয় বলেই তেলে বাড়তি কর বসিয়ে রোজগারের প্রচলিত পথেই হাঁটার চেষ্টা এটা।
উল্লেখ্য মোদী সরকার প্রথম জমানায় তেলে উৎপাদন শুল্ক বেড়েছিল ৯ বার। কমেছিল ২ বার।
অর্থমন্ত্রীর অবশ্য দাবি, বিশ্বের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও সেই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দেননি তিনি। তবে তাঁর বক্তব্য, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে আগামী দিনে সিএনজির মতো জ্বালানি বা বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো দূষণহীন ব্যবস্থা গড়ার দিকে হাঁটতে চাইছে দেশ। গণপরিবহণ ব্যবস্থারও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে এখন। আর মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির হার এখন অনেক কম। কী করে তা আয়ত্তে রাখতে হয় তা সরকার জানে। তেলের দাম বাড়লে কিসের উপর তার প্রভাব পড়ে তা-ও আমরা জানি।’’
পেট্রল পাম্পে বাড়তি কড়ি গুনে সরকারি আশ্বাসই প্রাপ্তি আমজনতার!