তখন উদ্ধারকাজ চলছে সেফ হাউসে।
সেফ হাউসে আগুন লেগে পুড়ে মৃত্যু হল ৯ করোনা রোগীর। এ ঘটনা ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওড়ায়ায়। একটি হোটেল ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল সেফ হাউস। কিন্তু রবিবার ভোরে সেখানেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের জেরেই আগুন এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে মনে করছে দমকল বিভাগ।
সরকারি আধিকারিকদের মতে, ভোর বেলা ওই সেফ হাউসের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকেই প্রথম এবং দ্বিতীয় তলে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। বিজয়ওয়াড়ার পুলিশ কমিশনার বি শ্রীনিবাসুলু বলছেন, ‘‘ভোর ৫টা বেজে ৯ মিনিট নাগাদ একটি ফোন আসে কন্ট্রোল রুমে। ওই ফোনে অগ্নিকাণ্ডের কথা জানানো হয়। ফোন পেয়েই দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান দমকলকর্মীরা। ৫টা বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ আগুন আয়ত্তে আসে।’’ তিনি এও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় ৩০ জন করোনা রোগী এবং ১০ জন স্বাস্থ্য কর্মী ওই সেফ হাউসে ছিলেন। ঘটনার জেরে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয় ওই সেফ হাউসে। আগুনের হাত থেকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে দু’জন সেফ হাউসটির বিভিন্ন তল থেকে লাফ পর্যন্ত দেন বলেও আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ‘স্বর্ণ প্যালেস’ নামে ওই হোটেলটি লিজ নিয়েছিল বিজয়ওয়াড়ার রমেশ হসপিটালস নামে একটি সংস্থা। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন প্রথমে গ্রাউন্ড ফ্লোর এবং অন্যান্য তলে ছড়িয়ে পড়ে। বিজয়ওয়াড়ার ফায়ার সেফটি ডিরেক্টর জয়রাম নায়েকের মতে, ওই হোটেলের নিরাপত্তা বিধি ভঙ্গ করা হয়েছিল। ওই কাণ্ডে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। মৃতদের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জগন্মোহন।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই, দেশে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪,৩৯৯
শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য সরকারকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। রবিবারই সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করে করোনা ধরা পড়েছে ৬৪ হাজার ৩৯৯ জনের। সারা দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা এখন সাড়ে ২১ লক্ষের বেশি। এর মধ্যে অন্ধ্রেই করোনা ধরা পড়েছে মোট ২ লক্ষের বেশি মানুষের। রবিবার ১০ হাজারের সামান্য বেশি মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন জগন্মোহন রেড্ডির রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা ব্যবস্থার ভিন্ন একটি ছবি সামনে চলে এল এ দিন।
আরও পড়ুন: ১০১ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা
এর আগে গুজরাতের আমদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আগুন লাগে। সেই অগ্নিকাণ্ডে আট জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এ বার সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার ছায়া বিজয়ওয়াড়ায়।