একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ঝুলে রয়েছে আদালতে। ফাইল চিত্র।
প্রায় আড়াই বছর আগে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকারের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হয়েছে। মোদী সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার পর দু’বছর কেটে গিয়েছে। এখনও শুনানিই শুরু হয়নি। এ দিকে কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রের আসন পুনর্বিন্যাসে নেমে পড়েছে। নিরুপায় হয়ে আজ ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানালেন। কিন্তু জবাব মিলল, গরমের ছুটির পরে মামলার শুনানির চেষ্টা হবে।
২৩ মে থেকে সুপ্রিম কোর্টে গরমের ছুটি পড়ছে। ফের আদালত খুলবে ১১ জুলাই। যার অর্থ, আগামী আড়াই মাসেও সুপ্রিম কোর্টে ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি হবে না। তার পরেও কবে হবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ প্রধান বিচারপতি রমণা জানিয়েছেন, পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা। কয়েক জন বিচারপতি এর মধ্যে অবসর নেবেন। ফলে তাঁকে অন্যান্য বিচারপতিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
শনিবার একটি আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, মানুষ এখন ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’-এর যুগে ‘ইনস্ট্যান্ট জাস্টিস’ বা তৎক্ষণাৎ বিচার আশা করছে। আইনজীবী মহলে প্রশ্ন, দু’বছর পরেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির আশা করাটা কি তৎক্ষণাৎ বিচারের আশা করা?
আইনজীবীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে মামলা নয়। ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে ওমর আবদুল্লা, ফারুক আবদুল্লা-সহ কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের আটক করে রাখার বিরুদ্ধে হেবিয়াস কর্পাসের মামলা, নাগরিকত্ব আইন সংশোধন, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে মামলা, নির্বাচনী বন্ড নিয়ে আপত্তির মামলাও গত দু’বছরে কোনও অগ্রগতি হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, কোভিডের জেরে ভার্চুয়াল শুনানি চলছিল বলেই এই সব মামলার অগ্রগতি হয়নি। কারণ একগুচ্ছ মামলাকারী, এত জন আইনজীবী, নথি নিয়ে ভার্চুয়াল শুনানিতে এই সব মামলা শোনা মুশকিল।
২০১৯-এর ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন হয়। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়। এক বারই মাত্র ২০১৯-এ পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে এর শুনানি হয়েছিল। সেখানে এই মামলা ৭ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানোর আর্জি শোনা হয়। তার পরে ২০২০-র মার্চে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ৫ বিচারপতির বেঞ্চেই এই মামলার শুনানি হতে পারে। তার পরেআর শুনানি হয়নি।
ইতিমধ্যে ওই বেঞ্চের এক বিচারপতি অবসর নিয়েছেন। আজ মামলাকারীদের হয়ে পি চিদম্বরম, কপিল সিব্বল, শেখর নাফাডে-সহ আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির সামনে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। প্রধান বিচারপতি গরমের ছুটির পরে এই বিষয়টি দেখবেন বলে জানানোর পরে চিদম্বরম ছুটির পরেই দ্রুত শুনানির অনুরোধ করেন। আইনজীবীদের বক্তব্য, ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে মামলারই এখনও ফয়সালা হয়নি। তার পরে জম্মু-কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধেও মামলা জমা পড়েছে।