দুরাশাই রইল আয়করে ছাড়

আয়করের বোঝা আরও বাড়ল ধনীদের। বছরে আয় ২ কোটি টাকা ছাড়ালে, নয়া সেসের জেরে এখন তাঁদের বাড়তি আয়কর গুনতে হবে ৩%।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৯
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অপেক্ষার উপহার তো এলই না। বরং বরাতে জুটল তেলে বাড়তি করের বোঝা। বাজেটের দিন শেষে মনখারাপ মধ্যবিত্তের সামনে শুধু পড়ে রইল বাড়ি আর বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনে কর বাঁচানোর হাতছানি!

Advertisement

আয়করের বোঝা আরও বাড়ল ধনীদের। বছরে আয় ২ কোটি টাকা ছাড়ালে, নয়া সেসের জেরে এখন তাঁদের বাড়তি আয়কর গুনতে হবে ৩%। আয়ের অঙ্ক ৫ কোটি ছাড়ালে, বাড়তি গুনতে হবে ৭% কর।

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় ফেরার পরে মধ্যবিত্তদের বড় অংশের আশা ছিল, বিপুল সমর্থনের ‘উপহার’ হিসেবে এ বার আয়কর ছাড়ের সুবিধা বাড়বে। করের হার না বদলালেও, অন্তত ৩ বা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত হবে। এখন বছরে যার অঙ্ক ২.৫ লক্ষ। প্রবীণ নাগরিকদের ৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে স্রেফ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে আয়কর গুনতে না-হওয়ার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। যা বলা হয়েছিল অন্তর্বর্তী বাজেটেও।

Advertisement

করমুক্ত আয় ৫ লক্ষ টাকা হওয়া আর ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে কর গুনতে না-হওয়ার মধ্যে ফারাক বিস্তর। ৫ লক্ষ টাকা করমুক্ত হলে, সেই আয়ের জন্য আয়কর দিতে হয় না। অর্থাৎ, কারও বছরে রোজগার ৮ বা ১০ লক্ষ টাকা হলেও, এই সুবিধা ভোগ করেন। কিন্তু বর্তমান ছাড় রিবেট-নির্ভর। মোট আয় থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় (৮০সি ধারায়), তার সঙ্গে গৃহঋণের সুদ, জাতীয় পেনশন প্রকল্প, স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম ইত্যাদি বাবদ ছাড়প্রাপ্ত আয় বাদ দিয়ে যা থাকে, সেটিই হল করযোগ্য আয়। অন্তর্বর্তী বাজেট জানিয়েছিল, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে ১২,৫০০ টাকা পর্যন্ত রিবেট মিলবে। কারও আয় ৫ লক্ষ হলে, ছাড়ের ২.৫ লক্ষ টাকা বাদ দেওয়ার পরে বাকি ২.৫ লক্ষে ১২,৫০০ টাকাই কর বসতে পারে। তাই রিবেটের অঙ্ক ৩,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২,৫০০ করে কেন্দ্র বলেছিল, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত।

কিন্তু এতে মুশকিল দু’টি। প্রথমত, ৮০সি ধারা বা অন্যান্য করসঞ্চয়ী প্রকল্পে ঊর্ধ্বসীমার থেকে কম টাকা লগ্নি করলে, করযোগ্য আয় বাড়ে। কমে ছাড়ের সুবিধা। দ্বিতীয়ত, করযোগ্য আয় বছরে ৫ লক্ষের থেকে এক পয়সাও বেশি হলে, ওই সুবিধার এক আনাও ঘরে তোলা যায় না।

তবে করদাতাদের স্বস্তি দিতে পারে কর ও রিটার্ন জমার প্রক্রিয়া সরল করার আশ্বাস। যেমন, ‘অ্যাসেসমেন্ট’ পরীক্ষার প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে পুরো নেট-ভিত্তিক করতে চায় কেন্দ্র। অনেকের মতে, তাতে ঘুষ চাওয়ার সুযোগ কমবে। আসতে পারে আয়কর রিটার্নের নতুন ফর্ম। যেখানে আয়, সঞ্চয়, করছাড়ের তথ্য লেখা থাকবে আগে থেকে। দাবি, তাতে তথ্যের ত্রুটি কমবে, কমবে রিটার্ন দাখিলের সময়ও।

কর ছাড় আশা করে রিটার্ন দাখিলে সুবিধা! নাকের বদলে নরুন কি?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement