ভাড়া না পেয়ে বিড়ম্বনায় বিধায়করা।
পরিবারের সদস্য সংখ্যা সীমিত। কিন্তু বাড়িতে রাত-দিন বহিরাগতদের আনাগোনা। তার উপরে একটা ঘরে জনাচারেক বলশালী লোক সর্বদাই বিরাজমান। তাঁদের কোমরে-হাতে আগ্নেয়াস্ত্র! রাত-দিনের হিসেব নেই। লোকে একটা গ্যারাজই পায় না, এই ভাড়াটে আবার কয়েকটা গাড়ি রাখার আবদার জানাচ্ছেন! সেই সঙ্গে উপরি পাওনা যখন-তখন অতিথি আপ্যায়ন, অঢেল জল খরচ, বিদ্যুতের অপচয়, প্রতিবেশীদের বিরক্তি।
জনপ্রতিনিধি হিসেবে বা পাত্রীপক্ষের কাছে তাঁদের নম্বর যতই বেশি হোক, ভাড়াটে হিসেবে যে অসমের বিধায়কেরা একেবারেই ব্রাত্য, তা এ বার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন তাঁরা।
অসম বিধানসভার পুরনো বিধায়ক হস্টেল ছিল ‘অসম টাইপ’-এর। অর্থাৎ কাঠের একতলা বাংলো ধাঁচের আলাদা বাড়ি। সেই সব বাড়ি বহু পুরনো। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গোটা বিধায়ক আবাস ভেঙে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের মতো করে ফেলা হবে। মোট ৫৪টি পুরনো বাড়ির মধ্যে বেশ কয়েকটি ভাঙা হয়েছে। ফ্ল্যাটের ধাঁচে নিউ এমএলএ হস্টেলও তৈরি হয়েছে। একাংশের কাজ সারা। এ বার বাকি পুরনো বাড়িগুলিও ভেঙে অন্য অংশে একই ধাঁচের নতুন হস্টেল তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে।
কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে ২০ জন আবাসিক বিধায়ককে নিয়ে। তাঁদের বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছিল। বাড়ি ভাড়া নিতে সরকার মাসে ৫০ হাজার পর্যন্ত টাকাও দেবে বলেছে। কিন্তু বিধানসভার সচিবালয় বার বার নোটিস দিলেও তাঁরা বাড়ি খালি করছেন না। গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাড়ি খালি করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল তার মধ্যে যে কোনও উপায়ে ভাড়া বাড়ি খুঁজে নিতে হবে। সেই তারিখ পার হওয়ার পরে আবাসের জল ও বিদ্যুতের লাইনও কেটে দেওয়া হয়।
কিন্তু বাড়ি আঁকড়ে থাকা ২০ জন বিধায়ক জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছেন না। কারণ বিধায়কদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার অনেক ঝঞ্ঝাট। তা ছাড়া গাড়ি রাখার জায়গা, দেহরক্ষীদের ঘর— এমন অনেক কিছু দরকার পড়ে।
কিছুতেই ভাড়া বাড়ি জোগাড় করতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রী ও স্পিকারের দ্বারস্থ হন বিধায়কেরা। তাঁদের কাতর অনুরোধে সচিবালয়ের তরফে বাড়ি ছাড়ার সময়সীমা ২০ অগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহও ফের চালু করা হয়েছে।